ইসলামের তরবারি খালিদ বিন ওয়ালিদের জীবনী


খালিদ বিন ওয়ালিদ রাঃ আনুমানিক ৫৯২ সালে মক্কায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ওয়ালিদ ইবনে মুগিরা ছিলেন কুরাইশ বংশের বনু মাখজুম গোত্রের শেখ। শা. ৬২৭ তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেন।


ইসলামের তরবারি খালিদ বিন ওয়ালিদের জীবনী খালিদ বিন ওয়ালিদ এর উক্তি,খালিদ বিন ওয়ালিদ এর জীবনী বই,খালিদ বিন ওয়ালিদ নাম রাখা যাবে কি,ইতিহাসের মহাবীর খালিদ বিন ওয়ালিদ pdf free download,খালিদ বিন ওয়ালিদ ১০০ ঘটনা pdf,খালিদ বিন ওয়ালিদ জীবনী বই pdf  Facebook হজরত মুজাদ্দিদ - ই- আলফে...  140+ reactions  হযরত খালিদ বিন ওয়ালিদ রাঃ এর জীবনী - নাম -আবু সুলাইমান ...  মুতার যুদ্ধে, ৯ টি তলোয়ার বেংগে ছিল, খালিদ বিন ওয়ালিদ রা. এর হাতে। তারপর রাসুল স. সাইফুল্লাহ উপাদি দেন. 2 yrs. Md Razzak Alif. ওমর (রাঃ)  eracox.com  https://eracox.com › খাল...  খালিদ বিন ওয়ালিদ ও তার সংক্ষিপ্ত  জীবনী - তাপরাজেয় সমর নায়ক।

তিনি নবী মুহাম্মাদ(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম), খলিফা আবুবকর রাঃ এবং উমরের রাঃ সেবায় একজন আরব মুসলিম সামরিক সেনাপতি, যিনি ৬৩২–৬৩৩ সালে আরবে বিদ্রোহী উপজাতিদের বিরুদ্ধে রিদ্দার যুদ্ধ, ৬৩৩–৬৩৪ সালে সাসানীয়া ইরাক এবং ৬৩৪–৬৩৮ সালে বাইজেন্টাইন সিরিয়াতে মুসলিম বিজয়ের প্রথম দিকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন।

 বদরের যুদ্ধে খালিদ রাঃ অংশ নেন নি। উহুদের যুদ্ধে মক্কার বিজয়ে খালিদের কৌশল প্রধান ভূমিকা পালন করেছে। ৬২৭ সালে তিনি খন্দকের যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। এটি মুসলিমদের বিরুদ্ধে তার শেষ লড়াই ছিল।

গাসানিদের বিরুদ্ধে অভিযানে মুহাম্মাদ জায়িদ ইবনে হারেসাকে সেনাপতি হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন। তার মৃত্যু হলে জাফর ইবনে আবি তালিব এবং তারও মৃত্যু হলে আবদুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা সেনাপতি হবেন এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তারা সবাই নিহত হলে নিজেদের মধ্য থেকে যে কোনো একজনকে সেনাপতি নির্বাচন করার নির্দেশ দেওয়া হয়। 

যুদ্ধে জায়েদ, জাফর ও আবদুল্লাহ তিনজনই নিহত হন। এরপর খালিদকে সেনাপতি নির্বাচন করা হয়। এসময় তার অধীনে মাত্র ৩,০০০ সৈনিক ছিল। অন্যদিকে বাইজেন্টাইন ও তাদের মিত্র গাসানি আরবদের ছিল ১০,০০০ সৈনিক। এই কঠিন পরিস্থিতিতে খালিদ মুসলিম সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব গ্রহণ করেন। কৌশল প্রয়োগ করে তিনি ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞের পরিস্থিতি থেকে যুদ্ধের মোড় ঘুরিয়ে দেন।


রাতের বেলা খালিদ সৈনিকদের কিছু দলকে মূল বাহিনীর পেছনে পাঠিয়ে দেন। পরের দিন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পূর্বে ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে একের পর এক মুসলিমদের সাথে যোগ দেওয়ার জন্য তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়। এর ফলে শত্রুদের মনে বাড়তি সৈনিক আসছে এমন ধারণা তৈরি হয় এবং মনোবল হ্রাস পায়। সেদিন খালিদ যুদ্ধক্ষেত্রে অবস্থান সুরক্ষিত রাখতে সক্ষম হন। রাতের বেলা সৈনিকরা প্রত্যাবর্তন করে। বাইজেন্টাইনরা একে ফাঁদ ভেবে আর সামনে অগ্রসর হয় নি।এই যুদ্ধে খালিদের নয়টি তলোয়ার ভেঙে গিয়েছিল। এই যুদ্ধের কারণে তিনি আল্লাহর তলোয়ার উপাধিতে ভূষিত হন।

হুদাইবিয়ার সন্ধি বাতিল হওয়ার পর ৬৩০ সালে মুসলিমরা মক্কা বিজয়ের জন্য অগ্রসর হন। এই অভিযানে খালিদ মুসলিম বাহিনীর চারটি ভাগের একটির নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। এই চারটি বাহিনী চারটি ভিন্ন পথ দিয়ে মক্কা প্রবেশ করে। সেই বছরে তিনি হুনাইনের যুদ্ধ ও তায়েফ অবরোধে অংশ নেন। তাবুক অভিযানে তিনি মুহাম্মাদের অধীনে অংশ নিয়েছিলেন। সেখান থেকে তাকে দাওমাতুল জান্দালে প্রেরণ করা হয়। সেখানে তিনি দাওমাতুল জান্দালের যুদ্ধে লড়াই করেন এবং সেখানকার আরব শাসককে বন্দী করেন।

৬৩০ সালের জানুয়ারিতে (শাবান ৮ হিজরি) খালিদকে দেবী আল-উজমূর্তি ধ্বংস করার জন্য প্রেরণ করা হয়। তিনি এই দায়িত্ব সম্পন্ন করেন।

খালিদ বিন ওয়ালিদ (রা.) স্ত্রীকে বলেছিলেন- 

"প্রিয়তমা স্ত্রী, আমি বেশিক্ষণ বাঁচবো বলে মনে হচ্ছে না। তুমি আমার সারাটা শরীর পরীক্ষা করে দেখ, এমন কোনো স্থান কি আমার শরীরে আছে যেখানে শত্রুর তরবারীর আঘাত নেই"?

দীর্ঘক্ষণ পরীক্ষা করে স্ত্রী উত্তর দিলেন- ‘না। আল্লাহর রাস্তায় আপনি এত বেশি যুদ্ধ করেছেন যে আপনার সারাটা শরীরেই শত্রুর আঘাত আছে’।


খালিদ বিন ওয়ালিদ (রা.) তখন দুঃখ নিয়ে বললেন-

আল্লাহর কসম, প্রতিটা জিহাদে আমার নিয়ত থাকতো যেন আমি ময়দানে শ*ত্রুর আ'ঘাতে মা'রা যাই, তাতে যেন শহীদের মর্যাদা পাই। কিন্তু আফসোস, দেখ আজ যুদ্ধের ময়দানে মৃ'ত্যু না হয়ে আমার মৃ'ত্যু হচ্ছে আমারই বিছানায়! আমায় কি আল্লাহ শহীদদের মাঝে রাখতে চান না’?

স্বামীর আফসোস দেখে স্ত্রী কিছুক্ষণ মৌন রইলেন। এরপর করলেন সেই বিখ্যাত উক্তি __


'আপনার নাম স্বয়ং রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) রেখেছিলেন সাইফুল্লাহ/আল্লাহর তরবারী  এমন কোনো তরবারী কি দুনিয়ায় আছে যেটা আল্লাহর তরবারীর মোকাবিলা করতে পারে? তাইতো ময়দানে আপনার মৃত্যু হয়নি কারণ আল্লাহ তার তরবারী মাটিতে লুটিয়ে যেতে দেননি’। 


খালিদ বিন ওয়ালিদ (রাঃ) উক্তি

আমি শাহাদাতের ইচ্ছা নিয়ে এত বেশি যুদ্ধে লড়াই করেছি যে আমার শরীরের কোনো অংশ ক্ষতচিহ্নবিহীন নেই যা বর্শা বা তলোয়ারের আঘাতের কারণে হয়নি। এর পরেও আমি এখানে, বিছানায় পড়ে একটি বৃদ্ধ উটের মতো মারা যাচ্ছি। কাপুরুষদের চোখ যাতে কখনো শান্তি না পায়।

মৃত্যুশয্যায় খালিদ বিন ওয়ালিদ  - তালিবুল হাশেমী, অনুবাদ: আব্দুল কাদের; কালের কণ্ঠের বিশ্ববিখ্যাত মুসলিম বীর খালিদ বিন ওয়ালিদ (রা.) প্রতিবেদন থেকে সংগৃহীত

মূতার যুদ্ধে আমার হাতে নয়টি তরবারি ভেঙ্গে গিয়েছিল। শেষে আমার হাতে একটি প্রশস্ত ইয়ামানী তলোয়ার ব্যতীত আর কিছুই অবশিষ্ট ছিল না।

( সহিহ বুখারি )

ইসলামে প্রবেশ কর ও নিরাপদ থাক। অথবা জিজিয়া দেওয়ার ব্যাপারে সম্মত হও, তোমরা ও তোমাদের জনগণ আমাদের নিরাপত্তা লাভ করবে। অন্যথায় ফলাফল নিয়ে তোমরা নিজেদেরকেই দায়ী করবে, তোমরা জীবনকে যেভাবে আকাঙ্ক্ষা কর আমি মৃত্যুকে সেভাবে আকাঙ্ক্ষা করি।


খলিদ ইবনু ওয়ালীদ এর হতে কিছু বর্ণিত হাদীস

• আবূ তাহির ও হারামালা (রহঃ) খালিদ ইবনু ওয়ালীদ (রাঃ) যাকে সাইফুল্লাহ (আল্লাহর তরবারি) বলা হয়, তার থেকে বর্ণিত যে, তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর স্ত্রী মায়মুনা (রাঃ) এর গৃহে প্রবেশ করলেন। তিনি ছিলেন তার ও ইবনু আব্বাস (রাঃ) এর খালা। তখন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর কাছে ভুনা দব্ব (অনেকটা গুইসাপের মত দেখতে) দেখতে পেলেন, যা তাঁর (মায়মুনার) বোন হুফায়দা বিনত হারিস নাজদ থেকে এনেছিল। তিনি দব্বটি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে পেশ করলেন। নিয়ম ছিল কোন খাদ্যের বিবরণ ও তার নাম উল্লেখ না করা পর্যন্ত তা তার কাছে পরিবেশন করা হত না।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দব্বটির দিকে হাত প্রসারিত করলে উপস্থিত মহিলাদের একজন বললেন, তোমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে যা পেশ করছো সে সমন্ধে তাকে অবহিত কর। তারা বললো, ইয়া রাসুলাল্লাহ! ওটা দব্ব (অনেকটা গুইসাপের মত দেখতে)। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর হাত তুলে নিলেন। খালিদ ইবনু ওয়ালীদ (রাঃ) বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ ওটা কি হারাম? তিনি বললেন, না। তবে যেহেতু ওটা আমার জন্মভূমিতে নাই তাই আমার কাছে ওটা অপছন্দনীয় (অরুচিকর)। খালিদ (রাঃ) বলেন, অতঃপর আমি সেটা টেনে নিয়ে খেতে লাগলাম। আর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার প্রতি তাকিয়ে রইলেন। তবে তিনি আমাকে নিষেধ করেননি।


• আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ)  খলিদ ইবনু ওয়ালীদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট ভুনা দব্ব (অনেকটা গুইসাপের মত দেখতে) আনা হলে তিনি তা খাওয়ার উদেশ্যে হাত বাড়ালেন। তখন তাকে বলা হলঃ এটাতো দব্ব এতে তিনি হাত গুটিয়ে নিলেন। খালিদ (রাঃ) জিজ্ঞেস করলেনঃ এটা কি হারাম? তিনি বললেনঃ না। যেহেতু এটা আমাদের এলাকায় নেই তাই আমি এটা খাওয়া পছন্দ করি না। তারপর খালিদ (রাঃ) তা খেতে থাকেন, আর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দেখছিলেন।

• আল-কা’নবী (রহঃ) খালিদ ইবন ওয়ালীদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে মায়মুনা (রাঃ) এর ঘরে যান। তখন সেখানে একটি ভুনা দব্ব (অনেকটা গুইসাপের মত দেখতে) আনা হয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা খাওয়ার উদ্দেশ্যে হাত বাড়ালে মায়মুনা (রাঃ)-এর ঘরে অবস্থানকারী জনৈক মহিলা বলেনঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে উক্ত বস্তু সম্পর্কে জানিয়ে দিন, যা তিনি খাওয়ার ইচ্ছা করেছেন।


তখন তাঁরা বলেনঃ এতো দব্ব (অনেকটা গুইসাপের মত দেখতে)। একথা শুনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর হাত সরিয়ে নেন। খালিদ (রাঃ) বলেন, তখন আমি বললামঃ এটা কি হারাম? তিনি বললেনঃ না, তবে যেহেতু এটা আমাদের দেশে হয় না, সেজন্য আমি এটাকে ঘৃণা করছি। খালিদ (রাঃ) বলেনঃ একথা শুনে আমি তা টেনে নেই এবং খেয়ে ফেলি এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা প্রত্যক্ষ করেন।

• সা’ঈদ ইবন শুবায়ব (রহঃ)  খালিদ ইবন ওয়ালীদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘোড়া, খচ্চর এবং গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন। রাবী হায়ওয়া (রহঃ) এরূপ অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রত্যেক দাঁত বিশিষ্ট হিংস্র প্রাণীর মাংস খেতে নিষেধ করেছেন।


পুরোটা পড়ার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ ।


আপনাদের পরামর্শ আমাদেরকে জানান কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকলে কমেন্ট বক্সে লিখে কমেন্ট করুন


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ