HSC অর্থনীতি ১ম পত্র - প্রথম অধ্যায় মৌলিক অর্থনৈতিক সমস্যা এবং এর সমাধান এর গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

 


[ Economics Paper I ]


অভাব (Wants) : অভাব বলতে আকাঙ্খিত কোন দ্রব্য ও সেবা সামগ্রীর অনুপস্থিতিকে বুঝায়। অন্য কথায় কোন কিছু পাওয়ার আকাঙ্খাকে অভাব বলে।


অভাবের ৪টি বৈশিষ্ট্য (Charecterstics of Wants) : অভাবের ৪টি বৈশিষ্ট্য বর্ণিত হলো। 

১. অভাব অসীম, 

২. বিশেষ অভাব পূরণযোগ্য, 

৩. অভাব পরস্পরের পরিপূরক, 

৪, অভাব অনুকরণীয়।


আরো দেখুন 

 • A+ পেতে শুরু থেকে যেভাবে পড়বে


অভাবের শ্রেণিবিভাগ (Classifications of Wants) : অভাবকে মোটামুটি তিন শ্রেনীতে ভাগ করা যায়। যথা: 

(ক) নিত্য প্রয়োজনীয় অভাব, 

(খ) আরামপ্রদ অভাব, 

(গ) বিলাস দ্রব্যের অভাব। 


নিত্য প্রয়োজনীয় অভাব (Basic Needs) : নিত্য প্রয়োজনীয় অভাব বলতে সেই অভাবকেই বোঝায় যেগুলো

মানুষের জীবন ধারণের জন্য অপরিহার্য। যেমন: খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা ইত্যাদি নিত্য প্রয়োজনীয় অভাব ।


আরামপ্রদ অভাব (Comfort Needs) : যে সকল অভাব জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় নয় কিন্তু আরাম আয়াসের জন্য প্রয়োজন তাকে আরামপ্রদ অভাব বলে। 

যেমন: বৈদ্যুতিক পাখা, রুমে এসিলাগান, ফোমের চেয়ার ইত্যাদি আরামপ্রদ অভাব।


বিলাসজাত অভাব (Luxurious Needs) যে সকল দ্রব্য জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় নয় আবার

আরাম আয়েসের দিক থেকেও নয় শুধুমাত্র জাকজমক বা মর্যাদা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন তাকে বিলাস দ্রব্যের অভাব বলে। 

যেমনঃ দামী বাড়ি, দামী গাড়ি, অলংকার ইত্যাদি ।


অসীম অভাব (Unlimited Wants) : একটি অভাব পূরণ করার সাথে সাথে আরেকটি অভাব দেখা দিলে তাকে অসীম অভাব বলা হয়ে থাকে। যেমন- খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান প্রভৃতি প্রাথমিক অভাব পূরণ করলে মানুষ শিক্ষা, চিকিৎসা, সংস্কৃতি প্রভৃতির অভাব অনুভব করে। তাই বলা হয়, আজকের মানুষের অভাব অসীম।


আরো দেখুন 

ফেরাউনের লাশ ৩১১৬ বছর পানির নিচে অবিকৃত থাকার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা ও আল-কোরআন


সম্পদ (Wealth) : যেসব বস্তুগত ও অবস্তুগত দ্রব্যের উপযোগ আছে, যোগান সীমাবদ্ধ, হস্তান্তরযোগ্য এ বিনিময় মূল্য আছে তাকে সম্পদ বলে।


সম্পদের বৈশিষ্ট্য (Charecterstics of Wealth) : সম্পদের বৈশিষ্ট্য ৪টি উপযোগীতা, যোগান সীমাবদ্ধ,হস্তান্তরযোগ্যতা ও বিনিময় মূল্য আছে। সম্পদের বিকল্প ব্যবহার (Alternative Use of Resources) : একটি সম্পদের পরিবর্তে অপর সম্পদ দ্বার অভাব পূরণ করতে পারাকে সম্পদের বিকল্প ব্যবহার বলে ।


দুষ্প্রাপ্যতা (Scarcity): অপ্রতুলতা বা দুষ্প্রাপ্যতার শাব্দিক অর্থ হলো স্বল্পতা। তাই সম্পাদের স্বল্পতা বা অপ্রাচুর্যতাকে দুষ্প্রাপ্যতা বলে। মানুষের সকল অভাব একসাথে পূরন করা সম্ভব হয় না। তাই সমস্যার তীব্রতার ভিত্তিতে জরুরী আগে সমাধান করতে হয়। এভাবে মানব জীবনে দুষ্প্রাপ্যতার সমস্যা বিরাজ করে।


পছন্দ (Choice) : অভাবকে শ্রেণিবিভাগ করে অনেক অভাবের মধ্য থেকে গুরুত্বের ভিত্তিতে সঠিক অভাৰ বাছাই করাই হলো পছন্দ। যেমন একজন ব্যক্তির বস্ত্র, খাদ্য, শিক্ষা, চিকিৎসা, বাসস্থান ইত্যাদির অভাব রয়েছে। এর মধ্যে কোন, কোনটি আপে পূরণ করতে হবে তাই পছন্দ।


নির্বাচন (Selection) : অভাব পূরণের বিভিন্ন বিকল্প পদ্ধতি গুলোর মধ্য থেকে সর্বোত্তম পদ্ধতিটি বাছাই করার নির্বাচন। যেমন : একজন ব্যক্তির রক্তের অভাব রয়েছে। কিন্তু বস্তুটি হন্ত্রচালিত যন্ত্রচালিত এবং স্বয়ংক্রীয় মেশিনে উৎপাদন করা যায়। এই সকল পদ্ধতির মধ্য থেকে একটি পদ্ধতি বাছাই করাই নির্বাচন।


অর্থনৈতিক সমস্যা (Economic problem) : অসীম অভাব ও সীমিত সম্পদের মধ্যে সমন্বয় সাধন করতে গিয়ে মানুষ যে সব সমস্যার সম্মুখীন হয় তাকে অর্থনৈতিক সমস্যা বলে। মানব জীবনের সীমাহীন অভাব পূরনের জন্য প্রয়োজনীয় সম্পদের যোগান সীমিত। তাই মানব সমাজে অর্থনৈতিক সমস্যার উদ্ভব হয়। 

কেন্দ্রীয় অর্থনৈতিক সমস্যা (Central Economic Problem) : যে সকল অর্থনৈতিক সমস্যাকে কেন্দ্র করে অন্যান্য সমস্যার উদ্ভব হয় তাকে কেন্দ্রীয় অর্থনৈতিক সমস্যা বলে। 

যেমন : অভাব, দুষ্প্রাপ্যত ও নির্বাচন কেন্দ্রিয় অর্থনৈতিক সমস্যা।


মৌলিক অর্থনৈতিক সমস্যা (Basic Economic Problem) : কেন্দ্রীয় অর্থনৈতিক সমস্যাগুলোর সমাধান করতে গিয়ে মানুষকে আরও যে সকল সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় তাকে মৌলিক অর্থনৈতিক সমস্যা বলে । যেমন-

i) কি উৎপাদন করা হবে:

ii) কিভাবে উৎপাদন করা হবে: 

iii) কার জন্য উৎপাদন করা হবে।


অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধানের কর্মপর্যায় (Phases of activities in solving economic problem) : অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধানের জন্য যেসকল কর্মপ্রচেষ্টা গ্রহন করা হয় তাকে কর্মপর্যায় বলে। মানবজীবনে অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধানের কর্মপর্যায়কে চার ভাগে ভাগ করা হয় । যথা :

(ক) উৎপাদন

(খ) বিনিময়

(গ) বন্টন ও

(ঘ) ভোগ।


উৎপাদন সম্ভাবনা রেখা (Production Possibility Curve ) : উৎপাদন সম্ভাবনা রেখা এমন একটি রেখা যার প্রতিটি বিন্দুতে দেশের প্রচলিত সম্পদ ও প্রযুক্তি সাপেক্ষে দুটি দ্রব্যের বিভিন্ন উৎপাদন সংমিশ্রণ প্রকাশ পায়।


সুযোগ ব্যয় (Opportunity Cost) : কোন দ্রব্যের অতিরিক্ত এক একক উৎপাদনের জন্য এর নিকটতম বিকল্প দ্রব্যের যে পরিমাণ ছাড় দিতে হয় তাকে ঐ দ্রব্যের সুযোগ ব্যয় বলে।


সুযোগ ব্যয়ের প্রকারভেদ (Classification of Opportunity Cost) : সুযোগ ব্যয় তিন ধরনের হতে পারে। যথাঃ 

১. ক্রমবর্ধমান সুযোগ ব্যয়।

২. ক্রমহ্রাসমান সুযোগ ব্যয় ।

৩. স্থির সুযোগ ব্যয়।


ক্রমবর্ধমান সুযোগ ব্যয় (Increasing Opportunity Cost) : কোন দ্রব্যের উৎপাদন সমপরিমাণ বৃদ্ধি করতে গিয়ে যদি এর নিকটতম বিকল্প দ্রব্যের উৎপাদন ছাড়ের পরিমাণ ক্রমেই বাড়তে থাকে তবে তাকে ক্রমবর্ধমান সুযোগ ব্যয় বলে।


আরো দেখুন 

HSC অর্থনীতি ১ম পত্র - প্রথম অধ্যায় মৌলিক অর্থনৈতিক সমস্যা এবং এর সমাধান এর গুরুত্বপূর্ণ তথ্য - ২


দৃষ্টি আকর্ষণ: আপনার যদি ভালো লাগে লেখাটি অন্যদের সাথে শেয়ার করুন।



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ