জিরা পানির ইতিহাস কোথায় এখন জিরা পানি alhadimedia 360


 আপনাকে যদি চট করে বাংলাদেশে প্রচলিত কোমল পানির কয়েকটি ফ্লেভার অথবা ব্রান্ডের নাম বলতে আপনার মাথায় কি কি নাম আসবে? কোক, পেপসি, স্প্র্রাইড, সেভেন আপ, পাঞ্জাব, মিরিঙ্গা ও আরো কিছু এনার্জি ড্রিঙ্কস হয়ত. তাই না? কিছু সংখ্যক ব্যান্ড থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশের প্রচলিত ফ্লেভার কিন্তু দু একটাই. এই প্রচলিত ফ্লেভারগুলোর বাইরে যদি কোমল পানির নতুন কোন ফ্লেভারের নাম জানতে চাওয়া হয়. অনেকের মনেই হয়তো জিরাপানির নামটা আসবে.

 এইতো কয়েক বছর আগে. পানীয় ইন্ডাস্ট্রিতে এক নতুন drinks আসে যার নাম জিরাপানি. জিরাপানি নিয়ে দুহাজার ষোলো দুহাজার সতেরোর দিকে খুব মাতামাতি হলেও এখন আর সেই habit টা খুব একটা দেখা যায় না. কিন্তু কি এমন হয়েছিল যে, এত প্রমোশন করার পরও মার্কেটে এখন জিরাপানি সচরাচর পাওয়া যায় না. কোন ব্র্যান্ডের এখন কেমন অবস্থান মার্কেটে? কোথা থেকে এই জিরাপানির যাত্রা শুরু হলো? নতুন ট্রেভারের পানীয় হিসেবে এই ড্রি এর এখন চাহিদাই বা কেমন?

 আর wait না করে চলুন দেখা যাক. প্রথমেই একটু জিরাপানির ইতিহাসটা সম্পর্কে জানি. জিরাপানি আদতে এই উপমহাদেশের জন্য নতুন কোন পানীয় নয়. শুধু অতীতে সেই আমলে হজম সমস্যা নিরসনের জন্য জিরাপানি পান করা হতো. ধীরে ধীরে সময়ের পরিক্রমায় ভারতে এই জিরা শরবতকে বোতল জাত করা হয় ও বাজারজাত করা শুরু হয়. বর্তমানে ভারতের ছোটো বড়ো মিলে বেশ য়েকটি ব্র্যান্ডের জিরা ফ্লেভারের কোমল পানীয় পাওয়া যায়. 

প্রসিদ্ধ ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে পোকাগুলো রিঞ্চি বেশ উল্লেখযোগ্য. ভারত থেকে এবার আসা যাক বাংলাদেশে. বাংলাদেশে জিরা ফ্লেভারের কোমল ইতিহাস ভারতের মতোই শুরু মৃত মোগল সাম্রাজ্যের বদৌলতে ঢাকা ও ঢাকার আশেপাশের জুস পারগুলোতে জিরা শরবতের কথা প্রায়ই শোনা যায় আর Facebook এর কিছু গ্রুপ এর কল্যানে তার কিছুটা প্রচার ও প্রসারও হয় যা খুব বেশি আগের কথা.

 যাইহোক এই আদি জিরা সরবতকে প্রথমবারের মতো বাজারজাত করে বাজারে নিয়ে আসে RC. যদিও RC র international ফ্লেভার গুলোতে spice flavor আগে থেকেই ছিল, যা অনেকটা জিরাপানির মতোই. কিন্তু বাংলাদেশের জন্য এইভাবে জিরা ফ্লেভারের কোমল পানীয় ছিল একেবারেই নতুন সংযোজন. কোমল পানির ইন্ডাস্ট্রিতে আরসি এর আগে অনেকবারই নতুন কিছু সংযোজন করেছেন. 

সেই ধারাবাহিকতায় অনেকটা হুট করেই আরসি বাজারে নিয়ে আসে তাদের জিরাপানি. অনলাইন এবং অফলাইনে সমান তালে চলতে থাকে ক্যাম্পেন. সাময়িক সময়ের জন্য হলেও এভারেজ ইন্ডাস্ট্রিতে একটা ছোট খাটো ঝড় বয়ে যায় আর সে জিরাপানি আগমনের পর. বড় বড় কোমল পানীয় ব্র্যান্ডের সাথে প্রতিযোগিতায় যুক্ত থাকা আরসি যেন নতুন করে প্রাণ ফিরে পেল. আরসি জিরাপানির ব্যাপক প্রচার আর ভোক্তাদের সারায় অন্য brand গুলো স্বাভাবিকভাবেই চুপ করে ছিল না. 



যার কারণে তারাও বাজারে জিরা পানি ছাড়ার প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করে এবং বরাবরের মতোই সবার প্রথমে response করে প্রাণ. Resort, distribution, promotion, সবদিক থেকেই এগিয়ে থাকা বাংলাদেশের ফুড ইন্ডাস্ট্রি লিডার প্রাণের সাজা দেওয়াটা খুবই স্বাভাবিক ছিল. দু হাজার ষোলো সালের অক্টোবরে প্রাণ নিয়ে আসে প্রাণজিরা পানি. খুবই aggressive ক্রমশ আর distribution এর কারণে আর্শিয়ার মার্কেট coverage এ প্রাণ বড়োসড়ো প্রভাব ফেলতে সক্ষম হয় 

এবং জিরাপানি নিয়ে আর্শীর একক রাজত্ব শেষ হয়ে যায় কিছুদিনের মধ্যে আর্শি এর থেকে প্রথম counter attack টা আসে কিছুদিনের আরসি তাদের জিরাপানির নামটা trade mark করে রাখেন. তাই সরাসরি কেউ এই নামটা ব্যবহার করার নিয়ম ছিল না. তাই প্রাণ অনেকটা বাধ্য হয়েই তাদের drinks এর নাম পরিবর্তন করে নতুন প্রাণ মাশালা পানি নামে branding শুরু করে. এদিকে ড়ে আর্চি জিরাপানির গ্রহণযোগ্যতাও প্রাণ এবং অন্যান্য branded চাইতে ভালো ছিল. 

এবং সাধের দিক থেকেও প্রাণ জিরাপানি কিছুটা পিছিয়ে ছিল. প্রাণ ও আরসি এর মধ্যে অনেক দিন ধরেই একটা brand ware চলে. এবং attacking promotion চালিয়ে যেতে থাকে যার ফলে জিরাপানির হাইট্রাও বেশ বাড়তে থাকে. এবার যদি আমরা প্রোডাক্ট এর লাইফ সাইকেলের কথা চিন্তা করি ট্রান আর সি এর ব্র্যান্ড ওয়ারের সময়ই জিরাপানি তার ইন্ট্রোডাকশন স্টেজ থেকে রোজ পেজে চলে আসে যার যে কোন প্রোডাক্টের তুলনায় খুব দ্রুতই বলা যায়. 

Brand গুলোর এই aggressive promotion এর জন্য মানুষের কাছে awareness টাও বাড়তে থাকে. আর মার্কেটে প্রোমোশন এবং প্রোডাক্ট এর distribution এর কারণে ইনিশিয়ালি সেলের পরিমাণও বেশ বাড়তা আর এরই সাথে আরসি ও প্রাণের এই রাজত্বে ভাগ বসাতে বাজারে শুরু হয় নতুন নতুন কম্পিটিটারের আগুন. আফি সজীবের মতো ব্র্যান্ড গুলো জিরাপানি নিয়ে আসে বাজারে. 

সবশেষে দু হাজার সতেরো সালে কোকাকোলার মতো giant কোম্পানি ও তাদের জিরা fever drinks বাংলাদেশের বাজারে নিয়ে আসে. স্বাভাবিকভাবেই রোজ স্টেজ থেকে নতুন প্রোডাক্টটি maturity stage এ প্রবেশ করার কথা ছিল. কিন্তু অনেকেই তখন Facebook group এ, জিরাপানি নিয়ে পোস্ট দিতে শুরু করে এবং প্রচুর নেগেটিভ কমেন্ট আশা শুরু করে এই ব্যাপারটা আঁচ করতে পেরে হয়তো অন্যান্য brand গুলোর promotion এ খুব একটা এগিয়ে আসেনি.

 তাই হয়তো বছর না ঘুরতেই আরসি ছাড়া বাকি brand গুলোকে বাজারে খুব দেখা যায়নি. যার ফলে প্রোডাক্টটি মার্কেট থেকে হারিয়ে যেতে শুরু করে. এটার পিছনে হয়তো মানুষের কাছে আগের মতো সাড়া না পাওয়া বা আশানুরূপ সেল না পাওয়াটাই অন্যতম কারণ হতে পারে. এইদিকে অন্যতম brand গুলোর জিরাপানি মাঠ অনেক খোঁজাখুঁজি করে খুব একটা পাওয়া না গেলেও RCA এর জিরাপানি এখনো বাজারে টিকে আছে কিন্তু প্রোডাক্টটি এখনো আছে. 

ঠিক কি কারণে এই প্রোডাক্টটি ম্যাচুর হওয়ার আগেই হারে এর কারণ খুঁজতে গেলে আমাদের ফিরে যেতে হবে.  একদম শুরুতে. বলেছিলাম আপনাকে চট করে কিছু বাংলাদেশের soft drinks এর নাম বলতে বললে নির্দিষ্ট কিছু flavor এর b নতুন কিছু মাথায় রাখবে না. আমরা বিশেষ করে বাংলাদেশিরা এই বিশেষ কয়েকটি fever এর বাইরের soft drinks এ তেমন অভ্যস্ত নই. বেশ কয়েক বছর আগের বিশেষ করে Nineteen screech রা lemon flavor এর এক drinks হয়তো মনে করতে পারবে. 

সেই ফ্লেভারটিও কিছু সময় পাওয়া গেলেও পরে আর সেই গ্রোথ ধরে রাখতে পারেনি. আসলে আমরা কনজিউমাররা নির্দিষ্ট কিছু ফ্লেভারি অভ্যস্ত কারণ কোকাতলা এবং পেপসির মূলত আমাদের দেশে প্রথম solve drinks introduce করেছে এবং এদের এত বছরে এদের ব্র্যান্ডিং এতটাই স্ট্রং ছিল যে কেউ যদি আমাদের সার্ভিংসের নাম বলতে বলে আমাদের মাথায় PFC আসে. Mirinda fantase seven up ও খুব strongly আমাদের মাথায় গেঁথে থাকে. কিন্তু জিরাপানিটা ঠিক সেভাবে নিজেদের অবস্থান তৈরি করতে পারেনি.

 হয়তো জিরাপানি টিকে না থাকার পিছনে এটা অন্যতম প্রধান একটি কারণ. দ্বিতীয়ত ব্র্যান্ড বেদের স্বাদের তারতম্বর কারণে শুরুতে জিরাপানির প্রতি, ভোক্তাদের যে আকর্ষণ ছিল, সেই আকর্ষণ খুব বেশিদিন টেকেনি. যেই আকর্ষণটা আমাদের কোপ পেপসি কিংবা স্প্রাইড সেভেনএপের প্রতি আছে, এমনকি একই স্বাদ নিয়ে এত বছর মার্কেটে থাকার পরেও এবং তাছাড়াও লোকাল জুস ব্যারেজ জিরার শরবতের তুলনায় আরসি প্রাণ অথবা অন্য ব্র্যান্ডের জিরা ফেভার ড্রিঙ্কসের স্বাদ ও কালারের অনেকটাই ডিফারেন্ট. 

যা ভক্ত কছে সেরকম গ্রহণযোগ্যতা না পাওয়ার জন্য আরেকটি কারণ হতে পারে. FMCG প্রোডাক্ট এর নিয়ম অনুসারে মানুষের এক ধরনের solf drinks বার বার কেনার কথা কিন্তু সেটা জিরাপানির ক্ষেত্রে আমাদের মনে হয় একটু আলাদাই ছিল. কাছে কি মনে হয়? প্রথমবার হয়তো প্রমোশন এবং জিরাপানি try করেছেন, তারপর হয়তো আরেকবার কিন্তু পেপসির মত কি রেগুলার কনসম করছেন? হয়তো জিরাপানির aggressive promotion এর কারণে শুরুর দিকে ভোক্তাদের কাছে প্রোডাক্ট ব্যাপক পরিচিতি লাভ করে

 কিন্তু কাস্টমার রিটেনশন কি সেরকম ছিল? আর জিরাপানি এভাবে হারিয়ে যাওয়ার পেছনে হয়তো ভোক্তার কাছে গ্রহণযোগ্যতা হারানোটাই মূলত মূল কারণ হতে পারে. তৃতীয়ত জিরাপানির প্রমোশনে সবার প্রকাশ থাকলেও অন্যের পজিশনিং টা কেউ তেমন ক্লিয়ার করতে পারেনি. প্রাণ তাদের নাম পরিবর্তন করে রি-ব্যানিং এর সময় জিরাপানিকে ভারী খাওয়া দাওয়া যেমন তেহারি, কচি খাওয়ার পরে পান করার ম্যাসেজ দিয়ে যাচ্ছিল. কিন্তু সেই একই জায়গায় কোক বছর ধরে কাজ করে আসছেন. ভালো করে খেয়াল করলে দেখবেন যে ঢাকার অনেক বিরিয়ানির দোকানে কোকের পোস্টার স্টিকার দিয়ে সাজানো থাকে.

 সবকিছু মিলিয়ে আমাদের বিরিয়ানি খাওয়ার পরের কথাই মাথায় আসে. তো প্রাণের জিরাপানি আসলে ওই জায়গাটা দখল করতে পেরেছিল. এভাবেই আমাদের solve drinks এর industry তে একটি নতুন প্রোডাক্ট এর আগমন হয় এবং খুব দ্রুত হারিয়ে যায়. হয়তো আরসি আরো কিছুদিন এই প্রোডাক্ট টা মার্কেটে ধরে রাখবে. যা তারা তাদের অন্য প্রোডাক্ট নিয়েও করেছেন. কিন্তু এভাবে put cell করে কত দিন টিকে থাকবে? তো আপনাদের কাছে কি মনে হয়? আর কি কি কারণ থাকতে পারে জিরাপানির এইভাবে মার্কেট থেকে হারিয়ে যাওয়ার পেছনে কী ? অবশ্যই কমেন্ট করবেন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

5 মন্তব্যসমূহ