মা আয়েশা (রা.) নবুয়তের চতুর্থ বা পঞ্চম বর্ষে জন্মগ্রহণ করেন। মূল নাম আয়েশা। উপনাম উম্মে আবদুল্লাহ। উপাধি সিদ্দিকা ও হুমায়রা।
অত্যধিক সুন্দরী হওয়ায় তাঁকে হুমায়রা বলা হতো। পরবর্তী সময়ে নবী করিম (সা.)-এর স্ত্রী হওয়ায় উম্মুল মুমিনিন বা মুমিনদের মা উপাধি ধারণ করেন।
আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) ছিলেন প্রথম খলিফা আবু বকর (রা.)–এর মেয়ে।
আয়েশা (রা.) নারী সাহাবিদের মধ্যে সর্বাধিক জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন। এ ছাড়া বিচক্ষণতা ও সাহসিকতায়ও অনন্যা ছিলেন তিনি।
আয়েশা (রা.) রাসুল (সা.)–এর কাছ থেকে তিনি ইসলাম সম্পর্কে প্রভূত জ্ঞান অর্জন করেছিলেন। তিনি ইতিহাস ও সাহিত্যের জ্ঞানার্জন করেছিলেন তাঁর বাবার কাছ থেকে। চিকিৎসা শাস্ত্রের জ্ঞান লাভ করেন বিভিন্ন অঞ্চল থেকে রাসুল (সা.)–এর দরবারে আসা আরব গোত্রের প্রতিনিধিদলের কাছ থেকে।
বিশেষ করে তাফসির, হাদিস, ফিকহ ও আরবদের বিভিন্ন ঘটনা সম্পর্কে তাঁর অসাধারণ দক্ষতা ছিল।
আরও পড়ুন : বিয়েতে মেয়েদের পছন্দের গুরুত্ব কতটুকু?
তুলনামূলক কম বয়স হওয়া সত্ত্বেও তিনি ছিলেন নারীদের মধ্যে সর্বাধিক হাদিস বর্ণনাকারী। অনেক সাহাবি ও তাবেঈ তাঁর কাছ থেকে হাদিস বর্ণনা করেছেন। তাঁর বর্ণিত হাদিসের সংখ্যা প্রায় দুই হাজার ২১০টি।
আয়েশা (রা.) ৫৮ হিজরির ১৭ রমজান রাতে মৃত্যুবরণ করেন। আবু হুরায়রা (রা.) জানাজার নামাজ পড়ান। মদিনার জান্নাতুল বাকিতে রাতে দাফন করা হয়।
উম্মুল মুমিনীন আয়িশা (রা.) এর ১০টি বৈশিষ্ট্য
ইবনে সাদ (রাঃ) আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন । তিনি বলেন, আমাকে এমন দশটি বৈশিষ্ট্য দেওয়া হয়েছে যা রাসূল (সাঃ)- এর কোনো স্ত্রীকে দেওয়া হয়নি । তখন তাকে বলা হলো সেগুলো কি? তিনি বললেন,
১. রাসূল (সাঃ) আমাকে ছাড়া আর কাউকে বাকেরা অর্থ্যাৎ কুমারী অবস্থায় বিবাহ করেননি ।
২. তিনি আমাকে ছাড়া এমন কাউকে বিবাহ করেননি, যার পিতা-মাতা উভয়ে মুমিন ও মুহাজির ।
৩. আমার সিদ্ধান্তের ব্যাপারে আকাশ থেকে আয়াত নাযিল হয়েছে ।
৪. জিবরাঈল (আ) রাসূল (সাঃ) কে বলেন, তুমি তাকে বিবাহ কর নিশ্চয় সে তোমার স্ত্রী ।
৫. আমি এবং রাসূল (সাঃ) এক সাথে এক পাত্রে গোসল করতাম, যা তিনি অন্য কোনো স্ত্রীর সাথে করেননি ।
৬. তিনি আমার কাছে থাকাবস্হায় ওয়াহী নাযিল হতো,
৭. অন্য কোনো স্ত্রীর নিকট থাকাবস্হায় ওহি নাযিল হয়নি ।
৮. আল্লাহ তায়ালা রাসূল (সাঃ)- কে আমার বুকের উপর থাকাবস্থায় মৃত্যু দান করেন ।
৯. তিনি এমন এক রাত্রিতে মৃত্যুবরণ করেন যে রাত্রিতে তিনি আমার নিকট প্রদক্ষিণ করতেন ।
১০. তাকে আমার বাড়িতেই দাফন করা হয় ।
অন্য বর্ণনায় তিনি বলেন, আমাকে এমন কতগুলো বৈশিষ্ট্য দেয়া হয়েছে, যা তার অন্য কোনো স্ত্রীকে দেয়া হয়নি । তা হলো,
• উম্মতের সকল নারীর মধ্যে তিনি সবচেয়ে বেশী জ্ঞানী ছিলেন।
• স্বয়ং আল্লাহ তাঁকে রাসুল (সা.)এর স্ত্রী হিসেবে নির্বাচন করেছেন।
• রাসুল (সা.) তাঁর জন্য বিশেষভাবে দোয়া করেছেন।
• রাসুল (সা.) তাঁর ভূয়সী প্রশংশা করেছেন।
• তাঁর ইবাদত এবং দুনিয়া বিমুখতা ছিল দৃষ্টান্ত দেয়ার মতো ।
• হাদিস বর্ণনায় তিনি অনন্য উচ্চতায় আশ্বীন ছিলেন।
• তাঁর পুতঃপবিত্রতা নিয়ে কুরআনে ১০টি আয়াত নাযিল হয়েছে।
• তাঁকে গালমন্দ কিংবা তাঁর চরিত্র নিয়ে সন্দেহকারী কাফের।
• তাঁকে ভালোবাসা সকলের জন্য ওয়াজিব।
• তাঁকে কিছু স্পেশালিটি দিয়েছেন যা আর কাউকে দেয়া হয়নি।
পুরোটা পড়ার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ
আপনাদের পরামর্শ আমাদেরকে জানান কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকলে কমেন্ট বক্সে লিখে কমেন্ট করুন ।
0 মন্তব্যসমূহ