তারাবীহ নামাজের ফজিলত ও নিয়ম, দোয়া | alhadimedia 360

 



'তারাবীহ' অর্থ বিরতি সহ নামায। খুব দ্রুত না করিয়া ধীরে-সুস্থে এই নামায আদায় করিতে হয়। বোখারী ও মুসলিম শরীফে আছে, হুজুর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, যে ব্যক্তি রমযানের রাত্রে তারাবী নামায পড়ল, তার সবগুলি গুনাহ মাফ করিয়া দেওয়া হবে 


যখন রমযান শরীফের চাঁদ দেখা যায় সেই রাত হতে শাওয়ালের চাঁদ দৃষ্ট হওয়ার পূর্ব রাত পর্যন্ত প্রত্যেক রাত্রে এশার নামাযের পর ও বেতেরের পূর্বে বিশ রাকআত নামায দুই রাকআত করিয়া দশ সালামে আদায় করিতে হয়। ইহাকে তারাবীহ নামায বলে। এই নামায সুন্নতে মোআক্কাদা। ইহা জামাআতের সহিত পড়িলে অধিক সওয়াব পাওয়া যায। স্ত্রী-পুরুষ রোযাদার এমনকি বে-রোযাদারের প্রতিও ইহা পড়িবার হুকুম রয়েছে। এশার ওয়াক্তের সঙ্গে সঙ্গেই তারাবীর ওয়াক্ত


শুরু হয় এবং এশার ওয়াক্ত শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তারাবীর ওয়াক্তও শেষ হয়। এই নামায একা একা এবং জামাআতে দুই রকমই পড়িবার বিধান আছে। তারাবীহ নামাযে ইমাম সূরা-কেরাআত উচ্চ স্বরে পড়িতে হয়। রমযান মাসে তারাবীর সাথে যদি বেতেরের নামায জামাআতের সাথে আদায় করা হয়  সূরা-কেরাতও আওয়াজ করিয়া পড়িতে হবে। তারাবীহ নামাযে ত্রিশ পারা কোরআন শরীফ খতম করা ইহা এক অসীম সওয়াবের কাজ, এটা সুন্নত। একাকী তারাবীর নামায পড়িলে সূরা-কেরাআত এবং তাকবীরাদি উচ্চ স্বরে বা নীচু স্বরে পড়া যায় ।


তারাবীর নামায এশার ফরয ও সুন্নতের পরে পড়িতে হয়। শুরুতে এশার চারি রাকআত ফরয ও দুই রাকআত সুন্নত নামায আদায় করিয়া তারপর তারাবীর নামাযে শামিল হতে হবে।


তারাবীর নামাযের মাসলা-মাসায়েল

দুই রাকাত নামায : তারাবীহ নামাযের নিয়ত করিয়া প্রথমে সোবহানাকা, আউযু বিল্লাহ-বিসমিল্লাহ সহ আলহামদু লিল্লাহ পাঠান্তে যেকোন একটি সূরা মিলাইয়া প্রথমে এক রাকয়াত পড়িবে। দ্বিতীয় রাকআতে আলহামদুর পর পূর্ববর্তী রাকাতে যে সূরা পড়া হয়েছে তাহা বাদে অন্য একটি সূরা পড়ে সালাম ফিরায়া যেকোন একটি দুরূদ শরীফ একবার অথবা তিনবার পড়িয়া নামায শেষ করিবে।


তারাবীহ নামাযে সূরা পড়িবার নিয়ম : প্রথম রাকআতে আলহামদুর পর আলাম তারা, দ্বিতীয় রাকআত আলহামদুর পর লিঈলাফে, এইরূপে দুই রাকআত শেষ হলে । আবার দাড়াইয়া দুই রাকআতের নিয়ত করিয়া প্রথম রাকআতে আরা-আইতাল্লায়ী, পরবর্তী রাকআতে ইন্না আত্বোয়াইনা, এইরূপে দুই রাকাত শেষ করিবে দুই দুই রাকআত পড়িতে পড়িতে সূরা নাস পর্যন্ত মোট দশ রাকআত শেষ হইবে। পুনঃ ঐরূপে পূর্বের ন্যায় প্রথম দুই রাকআতে আলাম তারা ও লিঈলাফে, পরবর্তী রাকআতগুলি ঐ নিয়মেই শেষ করিয়া মোট বিশ রাকআত সমাপ্ত করিবে। ইহা ছাড়া প্রথম রাকআতে আলাম তারা, দ্বিতীয় রাকআতে কুল হুআল্লাহ, এইভাবে দুই রাকআত শেষ করিয়া আবার দুই রাকআতের নিয়ত করত প্রথম রাকআতে লিঈলাফি, দ্বিতীয় রাকআতে কুল হুআল্লাহ, এইভাবেও বিশ রাকাত নামায পড়া যায়।


প্রতি চারি রাকআত শেষে কিছুক্ষণ বসিয়া দোআ-দুরূদ পাঠ করা ও একটু আরাম করা সুন্নত। চারি রাকআত পর পর মোনাজাত করা যায়। তবে নামায শেষ করে একত্রে একবার মোনাজাত করাই উত্তম। স্ত্রী-পুরুষ সকলের পক্ষে তারাবীহ নামায পড়া আবশ্যক, তবে স্ত্রীলোকগণ পুরুষের ন্যায় সূরা-কেরাআত, দোআ-দুরূদ ইত্যাদি জোরে না পড়ে চুপে চুপে পড়িবেন। অন্যান্য নামাযের ন্যায় পুরুষদের তারাবীহ নামায জামাআতে পড়াই উত্তম।


তারাবীর নামায পাঠ করার নিয়ম : দুই রাকআতের নিয়ত করিয়া তাহরীমা বাঁধিয়া সানা, তাআউয, তাসমিয়া পড়িয়া সূরা ফাতেহা ও তাহার সাথে অন্য সূরা মিলাইয়া যথানিয়মে রুকু সেজদাসহ প্রথম রাকআত শেষ করিয়া দ্বিতীয় রাকআতে সূরা ফাতেহা ও অন্য সূরা বা আয়াত পড়ে রুকু-সেজদা করিবে ।


এইভাবে দুই রাকআত আদায় করিয়া একবার কিংবা তিনবার দুরূদ শরীফ পাঠ করত উঠে দাঁড়াবে আবার দুই রাকআত ঐরূপে নিয়তসহ পড়িবে । আর প্রতি চারি রাকআত আস্তে নির্দিষ্ট দোআ পড়িবে ও নির্দিষ্ট মোনাজাত করবে। বিশ রাকআত শেষে একবারে মোনাজাত করলে অথবা একেবারে না করলেও কোন গোনাহ হবে না।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ