শবে কদরের নামাজের নিয়ম, নিয়ত ও দোয়া | alhadimedia 360

 



সর্বোচ্চ মর্যাদার রাত্রিঃ 'শবে কদর' মানে কদরের রাত্রি। 'কদর'-এর অর্থ সম্মান বা মর্যাদা। এই রাত্রিতে মহা সম্মানীয় ও মহিমান্নিত মর্যাদার অধিকারী পবিত্র কুরআনুল করীমকে আল্লাহ পাক অবতীর্ণ করিয়াছেন। আর পবিত্র কুরআনের সম্মানের কারণেই এই রাত্রিকেও সম্মানিত বলিয়া ঘোষণা করা হইয়াছে। এই এক রাত্রির ইবাদাত-বন্দেগীকে এক হাজার মাস ইবাদাত করা হতেও অধিক গুরুত্বপূর্ণ বলা হয়েছে ।

 আল্লাহ পাক স্বয়ং বলেন : ليلة القدر خير من الف شهر -"কদরের রাত্রি হাজার রাত হইতেও উত্তম।”


রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন :

 مَنْ قَامَ فِي لَيْلَةِ الْقَدْرِ إِيْمَانَا وَ اِحْتِسَابًا غُفَرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَذ 

نبه من 

“যাহারা ঈমান এবং ছওয়াবের আশায় কদরের রাত্রিতে ইবাদাত বন্দেগী করিবে তাহাদের পূর্ববর্তী সমস্ত গোনাহ ক্ষমা করিয়া দেওয়া হয়।”


হযরত (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পবিত্র রমযান মাসের ২১, ২৩, ২৫, ২৭, ও ২৯ তারিখের কোন এক রাত্রিতে এই কদরের রাত্রি হয় বলিয়া উল্লেখ করিয়াছেন। তবে ২৭ তারিখের রাতকে অধিক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। অন্য হাদীসে আছে, হুজুর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন কদরের রাত্রিতে আল্লাহ পাক হযরত জিবরাঈল (আঃ) এর সঙেগ অসংখ্য ফেরেশতা দুনিয়াতে পাঠান। তাঁহারা সমস্ত ইবাদাতকারী মুসলমানের সঙ্গে সালাম ও মোছাফাহা করেন এবং সুবহে সাদিকের পূর্ব পর্যন্ত তাহাদের সমস্ত দোয়ায় শরীক হন।


ইমাম নববী (রঃ) বলেন ও ফেরেশতাদের সালাম মোছাফাহা করার আলামত এই যে, তখন ইবাদাকারীর মন খুশীতে ভরে যায়। চোখ হতে অশ্রু প্রবাহিত হয়ে এবং আল্লাহর মহববতে তাদের অন্তর পরিপূর্ণ হয়। 

হযরত ইমাম আবু হানীফা (রঃ) এবং অন্যান্য অধিকাংশ ইমামের মতে ২৭শে রমযানের রাত্রিই (অর্থাৎ ২৬শে রমযান বিদাগত রাত্রি) শবে কদর হওয়ার সম্ভাবনা বেশী। তবে অধিকাংশ ওলামাগণ এই মত গ্রহণ করেছেন।


কদরের রাতে পালনীয়

শবে কদরের রাত্রির এশার পর হতে সুবহে সাদিক পর্যন্ত সময়ে ইবাদাত-বন্দেগী করিতে হয়। নফল নামায, উমরী কাযার নামায, কুরআান পাক তেলাওয়াত করা, হাদীস-তাফসীর বা অন্য যে কোন ইসলামী আকীদার (পরশ পাথর) কিতাব পড়া বা শোনা, যিকির-আযকার, তাসবীহ-তাহলীল করা, মোরাকাবা করা এবং তাওবা ইস্তেগফারে মশগুল থাকা কর্তব্য ।


কদরের নামাযের নিয়ত

 نَوَيْتُ أَنْ أَصَلَّى لِلّهِ تَعَالَى رَكْعَتَى صَلوةِ ليلة القدر متوجها إلى جهَةِ الكَعْبَةِ الشَّرِيفَةِ - اللهُ أَكْبَرُ .


উচ্চারণ : নাওয়াইতু আন্ উছাল্লিয়া লিল্লাহি তা'আলা রাআতাই ছালাতি লাইলাতুল ক্বাদরি মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা'বাতিশ শারিফাতি - আল্লাহু আকবার ।

অর্থঃ আমি কেবলামুখী হইয়া দুই রাকাত শবে কদরের নফল নামায আদায় করিতেছি-আল্লাহু আকবার ।


প্রথমে দুই রাক'আত করিয়া ৪ রাকাআত : প্রথম রাক'আতে সূরা ফাতেহার

পরে সূরা কদর দ্বিতীয় রাক'আতে ৩ বার সূরা এখলাছ ।

দুই রাক'আত করিয়া ৪ রাক'আত : প্রথম রাক'আতে সূরা ফাতেহার পর সূরা কদর ৫ বার ও দ্বিতীয় রাক'আতে সূরা এখলাছ ৭ বার।


দুই রাক'আত করিয়া ৪ রাক'আত : প্রথম রাক'আতে সূরা ফাতেহার পর সূরা কদর ৫ বার ও দ্বিতীয় রাকাতে সূরা এখলাছ ১১ বার। এই নিয়মে পড়া উত্তম । এ ছাড়া সুবিধামত যে কোন সূরা সূরা মিলিয়ে পড়া যায়।

 প্রত্যেক ৪ রাক'আত নামাযের পর নিম্ন দোয়াটি ১০০ বার করিয়া পড়িবে।

 اللهم إنك عفو تحب العفو فاعفُ


উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন, তুহিব্বুল আফওয়া ফা ফু আন্নী ।

 “হে আল্লাহ! তুমি মার্জনাকারী। তুমি মার্জনাকে ভালোবাস ; অতএব তুমি আমাকে মার্জনা করে দাও।”


উপরোক্ত নিয়মে নামায আদায় কারীকে আল্লাহ মার্জনা করে দিবেন এবং সকল বিপদ-বালাই হতে মুক্ত রাখিবেন ।


কোরআন হাদীসের আলোকে কদরের রাতকেই ভাগ্য রজনী বলা হয়ে থাকে।




একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ