[4.4] |
লন্ডনে ডঃ আর্থার জে এলিসন পবিত্র কুরআনের আলোকে “অধ্যাত্ম তত্ত্ব এবং আধ্যাত্মিক চিকিৎসা”-এর উপর গবেষণা করছিলেন। গবেষণাকালে গভীর মনোযোগ এবং সূক্ষ্মদৃষ্টি দিয়ে তিনি পবিত্র কুরআন অধ্যয়ন করার সুযোগ লাভ করেন ।
মহাগ্রন্থ আল কুরআনের সত্যতা, বিজ্ঞানভিত্তিক তথ্য এবং সত্যে প্রভাবান্বিত হয়ে পরবর্তীতে তিনি স্বতঃস্ফুর্তভাবে ইসলামে দীক্ষিত হন । তাঁর ইসলামী নাম আব্দুল্লাহ এলিসন ।
সম্প্রতি মিসরের রাজধানী কায়রোতে অনুষ্ঠিত একটি বিজ্ঞান বিষয়ক সম্মেলনে বক্তব্য পেশ করতে গিয়ে ডঃ আব্দুল্লাহ এলিসন বলেন, পাশ্চাত্য বিজ্ঞানীদের দ্বীন ইসলামের উপর ব্যাপক গবেষণা এবং পড়ালেখা করা উচিত। কেননা একমাত্র ইসলামই এমন একটি ধর্ম যা একই সাথে মানবজাতির অন্তরলোক, বিবেক ও অনুভূতিকে সমভাবে সম্বোধন করেছে।
তিনি আরো বলেন, বিশ্বে জ্ঞানের যত দিক আছে, যত শাখা আছে তার সব কিছুই আছে মহাগ্রন্থ আল কুরআনে। মহাবিশ্ব সৃষ্টি, গ্রন্থ-নক্ষত্র সৃষ্টি,
জীবজগতের যত সব অজানা রহস্য উদ্ঘাটন করেছে চিরন্তন এ আসমানী কিতাব। চন্দ্র-সূর্য, গ্রহ- নক্ষত্রের গতি-প্রকৃতি, এর আবর্তন-বিবর্তন সম্পর্কে, পানি-সমুদ্র-বায়ুমন্ডল; বিদ্যুৎ, উদ্ভিদজগৎ, প্রাণীজগৎ, প্রাণের উৎপত্তি ও বিকাশ, মহাকাল ইত্যাদি সম্পর্কে নিখুঁত, নির্ভুল জ্ঞান-বিজ্ঞানের কথা পবিত্র কুরআন প্রকাশ করেছে।
ডঃ আব্দুল্লাহ এলিসন বৃটেনের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রোনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রাধান। তিনি কায়রোর ঐ সম্মেলনে বক্তব্য পেশের এক পর্যায়ে দুঃখ করে বলেন, মুসলমানেরা সার্বজনীন ধর্ম ইসলামের বিজ্ঞানবিষয়ক সব তথ্য এবং বর্ণনাসমূহকে অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের সামনে পরিচিত করার ব্যাপারে পরিপূর্ণ সফলতা অর্জনের ক্ষেত্রে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আধ্যাত্মিকতা এবং মনস্তাত্ত্বিক বিষয়াবলীর উপর শিক্ষা লাভ করা যায় বৃটেনে এমনি একটি সংস্থায় আমি ছয় বছর পর্যন্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করি। ঐ পদে কাজ করতে গিয়ে আমার বিভিন্ন ধর্মের উপর তুলনামূলক গবেষণা বা পর্যালোচনার সুযোগ ঘটে। “চিকিৎসা বিজ্ঞানে কুরআনের অবদান” আলোচ্য বিষয়ের উপর অনুষ্ঠিত কায়রোর ঐ সম্মেলনে ইসলামে দীক্ষিত হবার ঘোষণা প্রদান করে ডঃ আবদুল্লাহ বলেন, আমার গবেষণার আলোচ্য বিষয় ছিল।
“জীবের নিদ্রা এবং মৃত্যুর মাঝে সম্পর্ক” বিষয়ক। গবেষণার সময় অত্যাধুনিক ইলেকট্রোনিক যন্ত্রপাতি এবং বিজ্ঞান ভিত্তিক তথ্যের ভিত্তিতে তিনি ব্যাপক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছেন। এ গবেষনা কর্মে তিনি ডঃ ইয়াহ্ইয়া আল মাশরিকীর সাহায্য লাভ করেছেন, যিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মনস্তাত্ত্বিক বিভাগের প্রধান ছিলেন এবং কায়রো সম্মেলনে ডঃ এলিসনের সাথে যোগদানের জন্য এসেছিলেন।
ডঃ আব্দুল্লাহ বলেন, যখন তিনি কুরআনের আলোকে অধ্যাত্মতত্ত্ব এবং আধ্যাত্মিক চিকিৎসার উপর গবেষণায় মনোনিবেশ করেন, তখন বিস্ময়কর সব তথ্যাবলী তার সামনে উদ্ঘাটিত হয়। তিনি বলেন, “জীবের নিদ্রাবস্থা ও মৃত্যু সম্পর্কে" আমি একটি সন্দর্ভ রচনা করতে গিয়ে কুরআন অধ্যয়ন কালে আমার দৃষ্টি একটি আয়াতের উপর স্থির হয়ে গেল।
এ আয়াতটি মানুষের নিদ্রাবস্থা এবং নিদ্রা থেকে জাগ্রত হওয়া ও মৃত্যুর সাথে সম্পৃক্ত। ডঃ আব্দুল্লাহ বলেন, তিনি এবং ডঃ আল মাশরিকী সম্মিলিত ভাবে কুরআন শরীফের এ আয়াতটির উপর ব্যাপক গবেষণাকর্ম চালিয়ে এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে, প্রাণীর “নিদ্রা ও মৃত্যু” প্রকৃত পক্ষে একই সূত্রে গ্রথিত দুটি বস্তু এবং এ সম্পর্কে কুরআনে যে ব্যাখ্যা রয়েছে, বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যায়ও তার প্রমাণ বিদ্যমান।
অভিজ্ঞতার আলোকে এটা প্রমাণিত যে, যখন কোন মানুষ নিদ্রা যায় তখন তার দেহ হতে একটি জিনিস বের হয়ে যায়। এ জিনিস যখন দেহে ফিরে আসে তখন সে জাগ্রত হয়ে পড়ে। কিন্তু মৃত্যুর বেলায় তা আর দেহে ফিরে আসে না ।
অর্থাৎ মৃত্যু এবং নিদ্রাকালীন প্রাণ হরণের পার্থক্য ঐ আয়াতটিতে সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করা হয়েছে।
অতঃপর তিনি মুসলমানের নিকট আবেগজড়িত কণ্ঠে বলিষ্ঠ ভাষায় আবেদন করেন, তারা যেন বিশ্বব্যাপী ইসলামের পয়গাম ছড়িয়ে দেন, সার্বজনীন ধর্ম ইসলামকে অমুসলিম জাতিসমূহের সামনে বোধগম্য করে পেশ করেন। পাশ্চাত্যের লোকেরা যুক্তি এবং বিজ্ঞান ভিত্তিক আলোচনা গভীর ভাবে শোনে । ইসলামের আহ্বানকে তাদের ভাষায় বোধগম্য করে পেশ করলে আমার ধারণা, তারা ইসলামের প্রতি আরো বেশী আকৃষ্ট হবে ।
• দৃষ্টি আকর্ষ : যদি আপনাদের কাছে আজকের এই পোস্ট ভাল লেগে থাকে তাহলে আপনাদের বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। প্রয়োজনে এ রকম আরো post পেতে আমাদের follow করতে পারেন।
0 মন্তব্যসমূহ