প্রশ্ন ॥ চিপস্ সবার খুবই প্রিয়। চিপস্ প্যাকেটজাতকরণের সময় একটি বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। চিপস্ কারখানার নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের জন্য প্রবেশের পথে আঙ্গুলের ছাপ দেওয়ার জন্য একটি ডিভাইস স্থাপন করা হয়েছে।
ক. রোবটিক্স কী?
খ. প্রযুক্তি ব্যবহার করে মটর ড্রাইভিং শিখা সম্ভব- কথাটি ব্যাখ্যা কর। ২
গ. উদ্দীপকে কারখানায় ব্যবহৃত ডিভাইসটির প্রযুক্তিটি ব্যাখ্যা কর ।
ঘ. চিপসের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত প্রযুক্তির সুবিধা ও অসুবিধা উল্লেখসহ তোমার মতামত বিশ্লেষণ কর।
=> প্রশ্নের উত্তর
ক ) রোবটিক্স হলো প্রযুক্তির একটি শাখা যেটি রোবটসমূহের ডিজাইন, নির্মাণ, কার্যক্রম ও প্রয়োগ নিয়ে কাজ করে।
খ ) ভার্চুয়াল রিয়েলিটি প্রযুক্তি ব্যবহার করে মটর ড্রাইভিং শিখা সম্ভব। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি হলো সেই প্রযুক্তি যা ত্রিমাত্রিক বিশ্ব সৃষ্টি করে এবং যার দৃশ্যমানতা বাহক জীবন্তু। প্রকৃতঅর্থে বাস্তব নয় কিন্তু বাস্তবের চেতনা উদ্রেককারী যোগাননির্ভর কল্পনাকে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি বা অনুভবে বাস্তবতা বলে। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃত্রিম পরিবেশে বিশেষ পোশাক পরিধান করে বাস্তবে নয় ত্রিমাত্রিক গ্রাফিক্স প্রযুক্তির মাধ্যমে কম্পিউটারের পর্দায় গাড়ি চালানোর অভিজ্ঞতা অর্জন করা যায়। ফলে কোনো প্রকার শারীরিক ঝুঁকি বা বিপদ ছাড়াই রাস্তায় গাড়ি চালানোর বাস্তব অভিজ্ঞতা পাওয়া যায়।
গ ) উদ্দীপকে 'কারখানায় ব্যবহৃত ডিভাইসটির প্রযুক্তিটি হলো ফিঙ্গারপ্রিন্ট বায়োমেট্রিক্স প্রযুক্তি। মানুষের আঙ্গুলের ছাপ বা টিপসই অদ্বিতীয় অর্থাৎ একজন মানুষের আঙ্গুলের ছাপ বা টিপসই অন্য কোনো মানুষের আঙ্গুলের ছাপের বা টিপসইয়ের সাথে মিলবে না। ফিঙ্গারপ্রিন্ট বায়োমেট্রিক্স প্রযুক্তি ব্যবহার করার পূর্বে ব্যবহারকারীর আঙ্গুলের ছাপ ডেটাবেজে সংরক্ষণ করতে হয়। পরবর্তীতে এই রিডার আঙ্গুলের নিচের অংশের ত্বককে রিড করে সংরক্ষিত ছাপের সাথে তুলনা করে। রিডারটি ত্বকের টিস্যু এবং ত্বকের নিচের রক্ত সঞ্চালনের ওপর ভিত্তি করে ইলেকট্রোম্যাগনেটিক পদ্ধতিতে কাজ করে থাকে। ফিঙ্গারপ্রিন্ট রিডারের মাধ্যমে ব্যবহারকারী কোনো প্রোগ্রাম বা ওয়েবসাইটে ইউজার নেম এবং পাসওয়ার্ডের পরিবর্তে আঙ্গুলের ছাপ ব্যবহার করে লগ-ইন করতেপারে। কোনো সিস্টেমের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণ করতে মূলত ফিঙ্গারপ্রিন্ট রিডার ব্যবহৃত হয়। তাই, উদ্দীপকের চিপস্ কারখানার নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের জন্য প্রবেশের পথে আঙ্গুলের ছাপ দেওয়ার জন্য বায়োমেট্রিক্স ফিঙ্গারপ্রিন্ট ডিভাইসটি ব্যবহৃত হয়েছে।
ঘ ) উদ্দীপকে চিপসের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত প্রযুক্তি হলো ন্যানোটেকনোলজি । নিচে ন্যানোটেকনোলজির সুবিধা ও অসুবিধা উল্লেখপূর্বক আমার মতামত বিশ্লেষণ করা হলো-
সুবিধা :
i. খাবার সংরক্ষণ করা সহজ ও খাদ্যের গুণগত মান অটুট থাকে । ii. মোটর ইঞ্জিনে তাপীয় শক্তি অনেক কম খরচ হয়।
iii. ক্যান্সার চিকিৎসায় আক্রান্ত কোষকলাকে সহজে ধ্বংস করা যায়।
iv. ন্যানোটিউব, ন্যানোপার্টিক্যাল ইত্যাদি দ্বারা উৎপাদিত পণ্য মজবুত, বেশি স্থায়ী হয়।
v. উৎপাদিত পণ্য তুলনামূলকভাবে ছোট এবং ওজনে হালকা হয়।
vi. পানি বিশুদ্ধকরণে ন্যানো ম্যাটেরিয়ালসমূহকে ব্যবহার করা যায়।
অসুবিধা :
i. ন্যানোটেকনোলজি গবেষণা এবং প্রয়োগ অনেক ব্যয়সাপেক্ষ। ii. প্রচলিত শিল্প প্রতিষ্ঠান এবং ফার্মে এ প্রযুক্তির ব্যবহার অনেককে কর্মহীন করতে পারে।
iii. অনেক ন্যানো প্রডাক্টস মানুষের মস্তিষ্ক এবং ফুসফুসের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
iv. ন্যানো প্রযুক্তি ব্যবহার করে মারাত্মক যুদ্ধাস্ত্র তৈরি করা
সম্ভব বিধায় যুদ্ধক্ষেত্রে আরও ভয়াবহতার আশঙ্কা রয়েছে । v. এই প্রযুক্তির ব্যবহারে পানি এবং বায়ু দূষণ হতে পারে যা মানুষ এবং অন্যান্য প্রাণীদের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। vi. এই প্রযুক্তির ভুল ব্যবহারে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে ।
উপরিউল্লিখিত ন্যানোটেকনোলজির সুবিধা ও অসুবিধা বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, এর সুবিধার চেয়ে অসুবিধাই বেশি। কিন্তু চিপস যেহেতু সবার প্রিয় তাই অসুবিধাগুলো দূর করে কীভাবে সুবিধা বাড়ানো যায় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে ।
0 মন্তব্যসমূহ