সৃজনশীল তথ্য ও যোগাযোগ - প্রথম অধ্যায় - [রা. বো. ২০১৯]



 প্রশ্ন । বাংলাদেশের রাজধানীর অদূরে তথ্য প্রযুক্তি প্রয়োগে একটি বিশ্বমানের শিল্পকারখানা স্থাপন করার পরিকল্পনা করা হয়েছে, যেখানে অ্যাকচুয়েটর এর সাহায্যে দক্ষ হতে কম্পিউটারের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি তৈরি করার মাধ্যমে দেশকে উন্নত ও অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে সহায়তা করবে। উক্ত প্রতিষ্ঠানের দক্ষ প্রোগ্রামারগণ সিমুলেটেড পরিবেশ স্থাপন করে ঘরে বসে দর্শনার্থীদের শহরের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান দেখায় ব্যবস্থা করবেন ।


 ক. হ্যাকিং কী?

 খ. তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর বিশ্বই বিশ্বগ্রাম- ব্যাখ্যা কর।

 গ. শিল্পকারখানায় ব্যবহৃত প্রযুক্তি চিহ্নিত করে ব্যাখ্যা কর 

 ঘ. প্রোগ্রামারদের তৈরি প্রযুক্তি ইতিহাস ও ঐতিহ্য রক্ষায় কতটুকু ভূমিকা রাখে— মূল্যায়ন কর ।




 প্রশ্নের উত্তর..........


 ক ) হ্যাকিং হচ্ছে অনলাইনে বিনা অনুমতিতে কারো সিস্টেমে প্রবেশ করে তার ব্যক্তিগত বা প্রাতিষ্ঠানিক তথ্য প্রকাশ করা বা কারো সিস্টেমের ক্ষতিসাধন করা ।


 খ ) তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে মানুষ হাজার হাজার মাইল দূরে অবস্থান করেও ই-মেইল, ফ্যাক্স, মোবাইল, টেলিফোন, টেলিভিশন, ভিডিও কনফারেন্সিং, ভিডিও চ্যাট এবং সামাজিক মিডিয়া চ্যানেল ইত্যাদি ব্যবহার করে মুহূর্তের মধ্যে পৃথিবীর যে কোনো জায়গায় যোগাযোগ করতে পারে। যেমন- বর্তমানে মোবাইল ফোনে ঘরে বসে বাস, ট্রেন, বিমান, হোটেলের টিকিট রিজার্ভ করা সম্ভব হচ্ছে। এছাড়াও ঘরে বসে অনলাইনে ব্যাংকিং, লেনদেন, দরকারি যে কোনো পণ্যের অর্ডার, ডাক্তারি পরামর্শ সবই মুহূর্তের মধ্যে সম্ভব হচ্ছে। মনে হয় যেন সবাই একই গ্রামে বসবাস করছে । তাই বলা যায়, তথ্য ও প্রযুক্তি নির্ভর বিশ্বই বিশ্বগ্রাম।


 গ ) শিল্পকারখানায় অ্যাকচুয়েটর এর সাহায্যে যে প্রযুক্তি ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে তা হচ্ছে রোবট। বাংলাদেশের রাজধানীর অদূরে তথ্য প্রযুক্তি প্রয়োগ করে বিশ্বমানের শিল্পকারখানা স্থাপন করার পরিকল্পনা করা হয়েছে সেখানে রোবটের ব্যবহার ছাড়া প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি তৈরি করে দেশকে উন্নত ও অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করা সম্ভব নয়। কারণ রোবট ব্যবহারের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের সুবিধা পাওয়া যায় । যেমন-


 i. রোবট দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা কোনো ধরনের বিরতি ছাড়াই অবিরাম কাজ করতে পারে যেটা মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়।


 ii. রোবটকে কোনো ধরনের বেতন বা পারিশ্রমিক দিতে হয় না ফলে উৎপাদন প্রক্রিয়া আর্থিকভাবে সাশ্রয়ী হয়। 

iii. মানুষের তুলনায় রোবট অতি সূক্ষ্ম ও নির্ভুলভাবে কাজ করতে


 পারে। ফলে উৎপাদিত পণ্যের গুণগত মান অনেক উন্নত হয়।


 iv. রোবট মানুষের তুলনায় অতি দ্রুত কাজ করতে পারে। তাই রোবট ব্যবহার করে অধিক পণ্য উৎপাদন করা যায় ।


 v. রোবট যে কোনো ঝুঁকিপূর্ণ বা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কাজ করতে পারে।


 vi. রোবট কোনো বিরক্তি বা কাজকে ঘৃণা ছাড়া অবিরাম করতে পারে। 

vii. রোবট চালিত শিল্প প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন প্রক্রিয়ায় কোনো এসি, আলো, বাতাস, খাদ্য বা পানীয়ের কোনো প্রয়োজন হয় না। ফলে প্রতিষ্ঠানের দৈনন্দিন খরচ কম হয়।


 উপরিউক্ত সুবিধাগুলো পর্যালোচনা করে বলা যায় যে, দক্ষ হাতে কম্পিউটারের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি তৈরি করা ও দেশকে উন্নত ও স্বাবলম্বী করার জন্য রোবটের ব্যবহার অপরিহার্য।


ঘ ) উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানের দক্ষ প্রোগ্রামারগণ সিমুলেটেড পরিবেশ স্থাপন করে ঘরে বসে দর্শনার্থীদের শহরের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান দেখার যে ব্যবস্থা করলেন তা আসলে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি আমাদের দেশের ঐতিহ্য ও ইতিহাস রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। যেমন- জাদুঘরে ব্যাপকভাবে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। বিভিন্ন ঐতিহাসিক বিষয় যেমন কোনো প্রাচীন গুহা, ভাস্কর্য, ঐতিহাসিক ভবন, প্রত্নত্বাত্তিক নিদর্শন প্রভৃতি প্রদর্শনে জাদুঘরে বা বিভিন্ন ঐতিহাসিক গবেষণাতেও ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এর ফলে জাদুঘরে যেমন আগত দর্শনার্থীরা এ সমস্ত বিষয়গুলো পরিদর্শনে জ্ঞান ও আনন্দ লাভ করতে পারেন তেমনি আধুনিক ঐতিহাসিক গবেষকরাও প্রাচীন পৃথিবী সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে পারেন।


 তাই বলা যায়, প্রোগ্রামারদের তৈরি ভার্চুয়াল রিয়েলিটি প্রযুক্তি ইতিহাস ও ঐতিহ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ