বাংলা প্রথম পত্র - কবিতাঃ তাহারেই পড়ে মনে।

 



 কবিতার খুব গুরুত্বপূর্ন কিছু লক্ষ্যনীয় বিষয় আছে , যেগুলো আমাদের জানা উচিৎ সেটা নিয়ে আলোচনা করব এবং অনুধাবন প্রশ্নের জন্য ইম্পর্টেন্ট লাইন বলো দিব এবং অল্প ভাষায় তার ব্যাখ্যা দিয়ে দিব। 


প্রথমে লক্ষ্যনী বিষয়গুলোর দিকে আসি,


 কবিতাটি গঠনরতির দিক থেকে সংলাপনির্ভর রচনা।  কবিভক্ত ও কবির মাঝে কথোপকথন -  স্মৃতিচারনমূলক কবিতা। - কবিতায় ২টি বিষয় প্রকাশ পায়। প্রিয়জন হাড়ানোর বেদনাঘন বিষন্নতার সুর। প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য যেটি মানুষের মনে আনন্দমূখর মনোভাব তৈরি করে।

 কবিতার অন্যতম বৈশিষ্ঠ্য- এর নাটকীয়তা। কবিতায় ফুলের নাম আছে একটি- মাধবী। - ফলের ফুলের নাম আছে- ২টি।  বাতাবি লেবুর ফুল, আমের মুকুল - পাঠ পরিচিতির একটা যায়গায় পাবো, কবি তার স্বামী 'সৈয়দ নেহাল হোসেনের' কথা স্মরন করে কবিতাটি লিখেন।

 কিন্তু প্রশ্নের উত্তরে আমরা এই বিষয়টি উল্লেখ করবনা। আমরা লিখব 'প্রিয়জন হাড়ানোর বেদনা'।

আরেকটি বিষয় আমরা খেয়াল রাখব, -  উত্তরী- চাদর,  তাহারেই পড়ে মনে

  উত্তরিলা- উত্তর দিল বিভীষনের প্রতি মেঘনাদ এইটা নিয়ে অনেক কনফিউশন থাকে। - কবিতাটি প্রথম ১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দে 'মাসিক মোহাম্মদী' পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। - 


•••  অনুধাবন প্রশ্নগুলো •••


 "বসন্ত বরিয়া তুমি লবে নাকি তব বন্দনায়"

 • কবিভক্তের জিজ্ঞাসা, কারণ- কবি মনের বিষন্নতা এতটাই গভীর যে, ঋতুরাজ বসন্ত চলে আশার পরও সে তার প্রসংশায় মূখরিত কবিতা দ্বারা বসন্তকে বরণ করে নিচ্ছেনা।


 " অলখের পাথার বাহিয়া তরী তার আসছে কী?"

 • কবির উক্ত জিজ্ঞাসায় নিশ্চিত হওয়া যায় যে ঋতু পরিবর্তনের বা বসন্তের আগমনের সকল বৈশিষ্ঠ্য ফুটে উঠলেও কবির বিষণ্ণতায় ঘেরা উন্মনা মন তা খেয়াল রাখেনি।

 অলখ- অলক্ষ্য। অর্থাৎ, দৃষ্টি যেখানে তার সীমানা খুঁজে পায়না বা যার শেষ প্রান্ত দেখা যায়না।

 পাথার- সমুদ্র


 "সে ভূলেনি তো, এসেছে তা ফাগুন স্মরিয়া"

 • কবি তার বন্দনা গান রচনা করে বসন্তকে শুভেচ্ছা না জানালেও ফাগুন আসার সাথে সাথে বসন্তও চলে এসেছে। কবির অভিমান প্রকাশ পেয়েছে


 " যদিও এসেছে তুমি তারে করিলে বৃথাই"

 • কবিভক্তের অভিযোগ- বসন্তের আগমনকে কবি তার বন্দনা গান দ্বারা বরণ না করায় বসন্ত তার গুরুত্ব হাড়িয়েছে।।

(বসন্ত কবিদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন সময়। কবিরা তার বন্দনার গান দ্বারা ঋতুরাজের আগমনকে অন্যতম সৌন্দর্যের রুপ দেয়।)


 "হোক তবু বসন্তের প্রতি কেন এই তীব্র বিমূখতা"

 • কবিভক্তের আক্ষেপ-> কবিভক্ত বুঝতে পারছেনা, কেন কবি তার প্রসংশায় মূখরিত গান দ্বারা বসন্তকে বরণ না করে মুখ ফিরিয়ে আছেন।


 " কুহেলি উত্তরী তলে --------- পথে রিক্ত হস্তে"

 • শীত প্রকৃতিতে রিক্ততার( শূন্যতার) ছায়া ফেলে দেয়। গাছের পাতা ঝরে যায়। গাছ ফুলহীন হয়ে যায়। প্রকৃতি রিক্ততায় পরিপূর্ন হয়ে যায়। কিন্তু বসন্ত তার বিপরীত। শীত প্রকৃতিতে যে শূন্যতায় ভরিয়ে দেয়, বসন্ত সেখানে এনে দেয় পূর্নতা। বসন্তের আগমনে শীত তার রিক্ততা নিয়ে চলে গেলেও কবি মনের রিক্ততা রেখে যায়।

 "তাহারেই পড়ে মনে------- কোনো মতে।"

 • প্রকৃতিতে বসন্ত এলেও কবির মন প্রিয়জন হারানোর বেদনায় পরিপূর্ন। শীত প্রকৃতির সাথে সাথে তার মনে যে বিষণ্ণতার সুর এনে দেয়, বসন্তের আগমনেও তার কোনো ঘটনা ঘটেনা।। প্রিয়জনের কথাই বার বার মনে পরে যায়।।

 মূলত কবির প্রিয়জন হাড়ানোর বেদনার সুস্পষ্ট প্রভাব ও ইঙ্গিত উক্ত লাইন বা পুরো কবিতা জুরে ফুটে উঠেছে। 



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ