মসজিদে জামাত বন্ধ মানে কী নামাজ বন্ধ ??

 

[1.0]

সবকিছু মিলিয়ে মহামারী আকার ধারণ করা করোনায় বিপর্যস্ত গোটা বিশ্ব। আর করোনার বড় ঝুঁকিতে ঘনবসতির বাংলাদেশ। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, নিজেদের মধ্যে সচেতনতা না বাড়ালে । ভয়াবহ আকার ধারণ করবে করোনা।

করোনার বিস্তার রোধে সারা বিশ্বে আরব সহ আরো অনেক রাষ্ট্রে মসজিদে গিয়ে নামায আদায় স্থগিত রেখেছে।এটা এমন নয় যে ইসলাম বিরোধী কোন দল জোর পূর্বক নামাজ বন্ধ করে দিয়েছে।কিন্তু আমাদের দেশের কিছু মানুষ বিরোধিতা করে যাচ্ছে।তারা মসজিদে ছাড়া নামাজ পড়বে না।এমন ভাবে কথা বলছে যেনো মসজিদে নামাজ না পড়লে নামাজ হবে না।             

 একদা আবূ যার (রাঃ) হযরত মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ) কে জিজ্ঞাসা করলেন, পৃথিবীতে সর্বপ্রথম কোন্‌ মসজিদ স্থাপিত হয়? উত্তরে তিনি বললেন, হারাম (কা’বার) মসজিদ। আবূ যার বললেন, তারপর কোন্‌টি? তিনি বললেন, তারপর মসজিদুল আকসা। আবূ যার বললেন, দুই মসজিদ স্থাপনের মাঝে ব্যবধান কত ছিল? তিনি বললেন, চল্লিশ বছর। আর শোন, সারা পৃথিবী তোমার জন্য মসজিদ। সুতরাং যেখানেই নামাযের সময় এসে উপস্থিত হবে, সেখানেই নামায পড়ে নেবে। (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত ৭৫৩নং)

রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন কোন ব্যক্তি যেন তার কোন অসুস্থ উটকে সুস্থ উটের কাছে নিয়ে না যায়। (বোখারী ও মুসলিম)


[0.1]


হযরত মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আর সারা পৃথিবীকে আমার জন্য মসজিদ (নামাযের জায়গা) এবং পবিত্রতার উপকরণ বানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সুতরাং আমার উম্মতের মধ্যে যে ব্যক্তির নিকট যে কোন স্থানে নামাযের সময় এসে উপস্থিত হবে , সে যেন সেখানেই নামায পড়ে নেয়।” (বুখারী ৪৩৮নং)

কবরস্থান ও গোসলখানা ছাড়া সারা পৃথিবীর (সমস্ত জায়গাই) মসজিদ (নামায ও সিজদার স্থান)। (আবূদাঊদ, সুনান, তিরমিযী, সুনান, দারেমী, সুনান, মিশকাত ৭৩৭নং)

নির্মিত গৃহ্‌ মসজিদ ছাড়া অন্য স্থানেও নামায পড়ার বৈধতা উম্মতে মুহাম্মাদিয়ার জন্য এক স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য

শরীয়তি এমন হুকুম,স্পষ্ট এমন সুযোগ থাকার পরেও কিছু বলদ মার্কা বে-আলেম আবেগ দিয়া নানান ভাবে মানুষকে সামাজিক দুরুত্ব বজায় নারাখার মত উস্কে দিচ্ছে।

সূরা আর-রাদ (الرّعد), আয়াত: ১১


لَهُۥ مُعَقِّبَٰتٌ مِّنۢ بَيْنِ يَدَيْهِ وَمِنْ خَلْفِهِۦ يَحْفَظُونَهُۥ مِنْ أَمْرِ ٱللَّهِ إِنَّ ٱللَّهَ لَا يُغَيِّرُ مَا بِقَوْمٍ حَتَّىٰ يُغَيِّرُوا۟ مَا بِأَنفُسِهِمْ وَإِذَآ أَرَادَ ٱللَّهُ بِقَوْمٍ سُوٓءًا فَلَا مَرَدَّ لَهُۥ وَمَا لَهُم مِّن دُونِهِۦ مِن وَالٍ

অর্থঃ তাঁর পক্ষ থেকে অনুসরণকারী রয়েছে তাদের অগ্রে এবং পশ্চাতে, আল্লাহর নির্দেশে তারা ওদের হেফাযত করে। আল্লাহ কোন জাতির অবস্থা পরিবর্তন করেন না, যে পর্যন্ত না তারা তাদের নিজেদের অবস্থা পরিবর্তন করে। আল্লাহ যখন কোন জাতির উপর বিপদ চান, তখন তা রদ হওয়ার নয় এবং তিনি ব্যতীত তাদের কোন সাহায্যকারী নেই।


সূরা আল আনফাল (الأنفال), আয়াত: ৫৩

ذَٰلِكَ بِأَنَّ ٱللَّهَ لَمْ يَكُ مُغَيِّرًا نِّعْمَةً أَنْعَمَهَا عَلَىٰ قَوْمٍ حَتَّىٰ يُغَيِّرُوا۟ مَا بِأَنفُسِهِمْ وَأَنَّ ٱللَّهَ سَمِيعٌ عَلِيمٌ

অর্থঃ তার কারণ এই যে, আল্লাহ কখনও পরিবর্তন করেন না, সে সব নেয়ামত, যা তিনি কোন জাতিকে দান করেছিলেন, যতক্ষণ না সে জাতি নিজেই পরিবর্তিত করে দেয় নিজের জন্য নির্ধারিত বিষয়। বস্তুতঃ আল্লাহ শ্রবণকারী, মহাজ্ঞানী।


সূরা আল বাকারা (البقرة), আয়াত: ১৯৫

وَأَنفِقُوا۟ فِى سَبِيلِ ٱللَّهِ وَلَا تُلْقُوا۟ بِأَيْدِيكُمْ إِلَى ٱلتَّهْلُكَةِ وَأَحْسِنُوٓا۟ إِنَّ ٱللَّهَ يُحِبُّ ٱلْمُحْسِنِينَ

উচ্চারণঃ ওয়া আনফিকূফী ছাবীলিল্লা-হি ওয়ালা-তুলকূবিআইদীকুম ইলাত্তাহলুকাতি ওয়া আহছিনূ ইন্নাল্লা-হা ইউহিব্বুল মুহছিনীন।

অর্থঃ আর ব্যয় কর আল্লাহর পথে, তবে নিজের জীবনকে ধ্বংসের সম্মুখীন করো না। আর মানুষের প্রতি অনুগ্রহ কর। আল্লাহ অনুগ্রহকারীদেরকে ভালবাসেন।


এই আয়াত গুলো দ্বারা প্রমাণিত হয় যে জীবন নাশের কারণ থেকে বেঁচে থাকা অবশ্য কর্তব্য এবং ওয়াজিব। 


মহামারী আল্লাহর গজব  -

মহামারীর ব্যাপারে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘এটি আল্লাহর গজব বা শাস্তি বনি ইসরায়েলের এক গোষ্ঠীর ওপর এসেছিল, তার বাকি অংশই হচ্ছে মহামারী। অতএব, কোথাও মহামারী দেখা দিলে এবং সেখানে তোমরা অবস্থানরত থাকলে সে জায়গা ছেড়ে চলে এসো না। আবার কোনো এলাকায় এটা দেখা দিলে এবং সেখানে তোমরা অবস্থান না করে থাকলে, সে জায়গায় গমন করো না।’ (তিরমিজি, হাদিস : ১০৬৫)


হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, একদিন বৃষ্টিপাত হচ্ছিল প্রচুর, মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম,তার মুয়াজ্জিনকে বললেন, যখন তুমি ‘আশহাদু আন্নাহ মুহাম্মাদার রাসুল্লাহ’ বল, তারপর তুমি বলবে, ‘সাল্লু ফি বুয়ুতিকুম’ বা তোমরা ঘরে নামাজ আদায় করো। ( বোখারী ও মুসলিম )

যখন মোয়াজ্জিন এটা বললেন, তখন লোকেরা এটা অপছন্দ করল। তখন আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস তাদের লক্ষ্য করে বললেন, আমার ও তোমাদের চেয়ে উত্তম যিনি, হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিও বরং এটি করেছেন। তিনি এ কথা বলেছেন।

তিনি বলেন, বৃষ্টির দিনে যদি মসজিদে আসতে বারণ করা বা অনুৎসাহিত করা হয়, কারণ যিনি বৃষ্টি ভিজবেন, তিনি অসুস্থ হয়ে যেতে পারেন। অর্থাৎ কাদা শরীরে লেগে ক্ষত তৈরি হতে পারে এ কারণে যদি নামাজ আদায়ে বারণ করা হয়, তাহলে করোনা ভাইরাসের মতো অভূতপূর্ব রোগের কারণে কি এই বিধান দিতে পারে না?


অন্য সময়ে মসজিদে লোক পাওয়া যায় না, কিন্তু করোনা ভাইরাসের মধ্যে আবেগ দেখাচ্ছি। এটা কিন্তু আবেগের বিষয় না, আমরা আল্লাহ ভরসা বলে মসজিদে চলে যাচ্ছি। অথচ আল্লাহ কিন্তু আগে নিজেকে চেষ্টা করতে বলেছে তার পর আল্লাহ সাহায্য করবে।


• দৃষ্টি আকর্ষ : যদি আপনাদের কাছে আজকের এই পোস্ট ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনাদের বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। প্রয়োজনে এ রকম আরো post পেতে আমাদের follow করতে পারেন। 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ