হাদিসের আলোকে বিতরের নামাজ - বিতর একসালামেই তিন রাকাত | alhadimedia 360


 বিতর একসালামেই তিন রাকাত। এবং তা ওয়াজিব

দলিল

১.হজরত আয়েশা সিদ্দিকা রাঃ রেও.করেছেন-রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ৮রাকাত তাহাজ্জুদের পর ৩রাকাত বিতর আদায় করেছেন(বুখারী হা.নং১১৪৭,মুসলিম হা.নং৭৩৮)


২.উবাই বিন কাব রাঃ বর্ণনা করেছেন-রাসুলে পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ৩রাকাত বিতর পড়তেন, ১মরাকাতে سبح اسم ربك الاعلي ২য় রাকাতে সুরা কাফিরূন এবং ৩য় রাকাতে সুরা ইখলাস পড়তেন।(আবুদাউদ হা,নং১৪২৩,নাসায়ী হা.নং১৬৯৫,১৬৯৬,১৬৯৭,ইবনে মাজাহ,হা,নং১১৭১)

৩.একই কথা এবং তিন রাকাতে উল্লেখিত ৩সুরার কথা ইবনে আব্বাস(রাঃ)ও বর্ননা করেছেন।(তিরমিজি,হা,নং৪৬২,নাসায়ী,হা,নং১৪২৬,ইবনে মাজাহ১১৭২)

৪.বিখ্যাত তাবেয়ী ইমাম শা'বী যিনি ৫০০সাহাবী থেকে হাদিস আহরন করেছেন তিনি বলেছেন-আমি হজরত ওমর ও হজরত ইবনে আব্বাসকে জিজ্ঞাসা করেছি,রাসুলে পাকের রাতের নামাজ কেমন ছিলো?উভয়ে উত্তর দিয়েছেন,মোট ১৩রাকাত পড়তেন।তাহাজ্জুদ ৮রাকাত বিতর ৩রাকাত এবং ফজরের সুন্নত ২রাকাত।

৫.হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাঃ বলেছেন, রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন-রাতের বিতর ৩রাকাত দিনের বিতর তথা মাগরিবের নামাযের ন্যায়।

বায়হাকী,৩ঃ৩০-৩১,তবরানী মু'জামে আওসাত৭১৭০,দারে কুতনী১৬৩৫,)

আবুসালমা রাদি.রেও।করেছেন-রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শেষ রাতে ৩রাকাত বিতর পরতেন।(মুসান্নাফে ইবনে আবিশায়বা,৬৮৪২)


সকল সাহাবায়ে কেরাম তিনরাকাত বিতর পড়েছেন।

1.ইবনুস সাব্বাক্ব রাদি.বলেছেন-হজরত ওমর রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু আবুবকর সিদ্দিক রাঃকে দাফন করে মসজিদে এসে ৩রাকাত বিতর আদায় করেছেন।(মুসান্নাফে আব্দির রাজ্জাক৪৬৫১)

2.হোমাইদ আতত্বভীল রাহ বলেছেন-হজরত আনাস ও হজরত আলী রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহুমা রাতের শেষভাগে ৩রাকাত বিতর আদায় করতেন।(মুসান্নাফে ইবনে আবিশায়বা৬৮৪৩)

3.বিখ্যাত তাবেয়ী হজরত মাকহুল(রাঃ) বলেছেন-হজরত ওমর রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু ৩রাকাত বিতর পড়তেন, মাঝখানে সালাম দ্বারা ফসল(পৃথক)করতেননা।মানে একসালামেই ৩রাকাত পড়তেন।(মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা৬৮৩০)

4.হজরত ইবনে মাসউদ(রাঃ)বলেছেন-রাতের বিতর দিনের বিতরের(মাগরিবের)মতো,একসালামে তিনরাকাত।(মুসান্নাফে ইবনে আবিশায়বা৬৮৩৯,আবদুর রাজ্জাক৪৬৪৭)

5.হজরত উবাই বিন কা'ব ৩রাকাত বিতর পড়তেন এবং মাগরিবের ন্যায় শেষেই সালাম ফেরাতেন।


সকল তাবেয়ীনগনও বিশেষতঃ

 ফোকাহায়ে তাবেয়ীন এক সালামে ৩রাকাত বিতর পড়তেন।


 হজরত হাসান বসরী,হজরত মাকহুল রাদি. ১সালামেই ৩রাকাত বিতর পড়তেন,২রাকাতের পর সালাম ফেরাতেননা।(মুসান্নাফে ইবনে আবিশায়বা,৪৮৩৩,৬৮৩৫)


একরাকাত বিতরের উপর রাসুলে পাকের নিষেধাজ্ঞাঃ

হজরত আয়েশা,হজরত ওমর হজরত আনাস,হজরত উবাই বিন কা'ব,হজরত হাসান বসরী,হজরত মাকহুল সকলেই তিনরাকাত বিতর পড়েছেন এবং ৩য় রাকাতেই সালাম ফিরিয়েছেন। 

হজরত আবসাঈদ খুূদুরী (রা.)থেকে বর্ণিত, রাসুলে পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন-তোমরা লেজকাটা নামাজ পড়োনা।

একথা এজন্য বলেছেন,তিনি একদা লক্ষ্য করেছেন এক ব্যাক্তি একরাকাত বিতর পড়ে সালাম ফিরিয়ে ফেলেছেন। তা দেখে রাসুলে পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঐ হাদিসটি বললেন।(تمهيدابن عبدالبر ٥/٣٥٧

 

একটি আপত্তি ও তার জবাব - হজরত ইবনে ওমর একরাকাত বিতর পড়েছেন! এভাবে যে ২রাকাতে সালাম ফিরিয়ে আরেক রাকাত পৃথকভাবে পড়েছেন! 

জবাব:এটাহাদিসে ফে''লী,আর সে ইবনে ওমর(রাঃ)থেকেই হাদিসে কাওলী রেওয়ায়ত আছে একসালামে ৩রাকাতের।

হজরত ওকবা ইবনে মুসলিম উনাকে বিতর সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন-কেনো তুমি কি দিনের বিতর চেনোনা?আমি বললাম হ্যাঁ মাগরিবের নামায।তিনি বললেন হ্যাঁ এটাই বিতরের সংখ্যা।(شرح معاني الاثار ১/৩৬২,হা.নং১৬২৭)

বোখারী হা.নং ৯৯০ صلي ركعة واحدة توتر له ما قد صلي এর অর্থ রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতে দুই-দুই রাকাত করে নামাজ পড়তেন যখন ফজর কাছাকাছি হয়ে যেতো তখন একরাকাত পড়তেন যা পুর্ববর্তী নামাজকে বিতর করে দেয়।

এটাতে একরাকাতের কোন দলিল নেই।বরং ৩রাকাতেরই দলিল হয়েছে এই হাদিস। এটি বোখারীতে ৬বার তকরার হয়েছে।


একরাকাত বিশিষ্ট কোন নামাজ হয়না,হতে পারেনা





একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ