রমজানের রোজা কেন ফরজ || রোজা নিয়ে হাদিস শরীফে কি বলা হয়েছে

 


কোরআনে আরবীতে রোজাকে সাওম বা সিয়াম বলে। রোজা ইসলামের তৃতীয় স্তম্ভ।

কোরআনে বলা হইয়াছে :

ياَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُتِبَ عَلَيْكُمُ الصَيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى الذِينَ مِنْ قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ .


হে ঈমানদারগণ! পূর্ববর্তী উম্মতের ন্যায় তোমাদের উপরও রোজা ফরয করা হয়েছে। যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পার। বাকারা-১৮৩


সুবহে সাদিক হইতে সূর্য ডুবা পর্যন্ত রোজার নিয়ত করিয়া সকল প্রকার খাদ্য-পানীয় গ্রহণ ও যৌন কাজ কর্ম ইত্যাদি হইতে বিরত থাকাকে শরীয়তের পরিভাষায় রোজা বলে । রোজা র ফযীলত অসীম। কেননা আল্লাহ তাআলা স্বয়ং কুদরতী হাতে রোযাদারকে উহার পুরস্কার দিবেন। হাদীস শরীফে আছে,


হাদীসে আছে, হযরত (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, রোযাদারের জন্য দুইটি অতি আনন্দদায়ক সময়, একটি ইফতারের সময় অন্যটি আল্লাহর দীদার লাভের কালে । (বোখারী ও মুসলিম)


হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) বলেন, হযরত (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, রমযান মাস উপস্থিত হইলে বেহেশতের দরজাগুলি খোলা হয় ও দোযখের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং শয়তান শিকল পরিহিত অবস্থায় থাকে।


হুজুর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, রোযা ঢাল স্বরূপ। তোমাদের মধ্যে কেহ রোযা রাখিলে যেন বদ কথা না বলে, কলহ না করে। যদি তোমাকে কেহ গালি দেয় অথবা আঘাত করে, তবে বল ভাই, আমি রোযাদার।


অপর এক হাদীসে আছে, হুজুর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, রোযাদারের মুখের গন্ধ আল্লাহর নিকট মেশক অপেক্ষা অধিক প্রিয় । তিনি আরও বলেন, আল্লাহ্র সন্তুষ্টির জন্য যে কেউ একটি রোযা রাখিবে, তিনি তাহাকে দোযখের অগ্নি হইতে সত্তর বৎসরের রাস্তা দূরে রাখিবেন। (বোখারী ও মুসলিম)


অন্য হাদীসে বর্ণিত আছে, রোযাদারের নিদ্রাও এবাদতে পরিগণিত। হযরত আবুল আলিয়া বলেন, রোযাদার গীবত (পরনিন্দা) হইতে বিরত থাকিতে পারিলে তার সমস্ত দিবসই গণ্য হইবে এবাদতরূপে।


হাদীসে আছে, হালাল বস্তুর দ্বারা ইফতার করিয়া ঐ সময় দোআ করিলে রোযাদারের দোআ আল্লাহর দরবারে কবুল হয়। অন্য এক হাদীসে আছে, হুজুর (সাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি রোযা রাখিয়া মিথ্যা কথা পরিত্যাগ করিতে পারে নাই, খোদা তাআলা তার রোযার প্রতি রাজী হন না। অপর এক হাদীসে হযরত আব্বাস (রাঃ) বলেন, হুজুর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, কবর হইতে উঠিবামাত্রই তিন প্রকার লোকের সহিত আল্লাহর ফেরেশতাগণ মোসাফাহা করিবেন- (১) শহীদ, (২) রমযান মাসে এবাদতকারী ও (৩) আরাফার দিনের রোযাদার।


হাদীসে আছে, হুজুর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আরাফার দিন রোযা রাখিলে অতীত ও ভবিষ্যতের দুই বৎসরের গোনাহ মাফ হইয়া যায়। আশুরার তারিখেও রোযা রাখা। তদ্রূপ । যেকোন নফল রোযা পর পর দুই দিন রাখা উত্তম হযরত দাউদ (আঃ)-এর নিয়মানুসারে একদিন অন্তর একদিন রোযা রাখা উত্তম। স্ত্রীলোক স্বামীর বিনানুমতিতে নফল রোযা রাখা অনুচিৎ।


মেশকাত শরীফে আছে, হযরত (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, শাওয়াল মাসে ছয়টি রোযা রাখিলে পূর্ণ এক বৎসরের রোযার সওয়াব লিখা হয়। প্রতিমাসের তের, চৌদ্দ ও পনর তারিখকে আইয়্যামে বীয বলে। এই দিন গুলো তে  রোযা রাখা মোস্তাহাব।




একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ