যারা ইতিহাস ভুলে যায়, তারা ইতিহাসে হয়ে যাওয়া ভুলগুলোর পুনরাবৃত্তি ঘটায় __alhadimedia360

 

যারা ইতিহাস ভুলে যায়, তারা ইতিহাসে হয়ে যাওয়া ভুলগুলোর পুনরাবৃত্তি ঘটায়. আমরা ইতিহাসে হয়ে যাওয়া ভুলগুলো থেকে কখনোই শিক্ষা নেই না. যার ফলে তার খারাপ প্রভাব আমাদের উপরে পরে. আজকের  ইতিহাসের সবথেকে খারাপ. সাতটি ঘটনার কথা জানাবো. যা পুরো মানব জাতির ধ্বংসের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে. ওয়ার্ল্ড ওয়ার্ড ওয়ান, প্রথম বিশ্বযুদ্ধ পৃথিবীর সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক গুলোর মধ্যে একটি চার বছর ধরে চলা এই যুদ্ধে প্রায় সাত কোটি সৈনিক অংশগ্রহণ করেছিল. 

এই বিশ্বযুদ্ধে প্রায় এক কোটি ষাট লক্ষ মানুষ প্রাণ হারান. অনেক নতুন নতুন অস্ত্র, এই যুদ্ধে প্রথমবার ব্যবহার করা হয়েছিল. যার ফলে সারা বিশ্বজুড়ে যুদ্ধের ছবি পাল্টে যায়. যা পৃথিবীকে ধ্বংসের দিকে দিন দিন ঠেলে দিচ্ছে. উনিশশো আঠেরো সালের বিশ্ব মহামারী influencer, যে স্প্যানিশ ফুলু নামেও পরিচিত. এটি ইতিহাসের সবথেকে ভয়ানক মহামারীর ভিতর একটি.



 প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কিছুটা কমতে না কমতেই এই রোগের আক্রমণ শুরু হয়. এই মহামারী যখন চরম পর্যায় ছিল, তখন প্রায় পঞ্চাশ কোটি মানুষ এতে আক্রান্ত হয়. যা সে সময় পুরো পৃথিবী তিন ভাগের এক ভাগ জনসংখ্যা ছিল. আর মৃত্যুর হিসাবে দেখা হলে আনুমানিক দু থেকে পাঁচ কোটি মানুষ এতে প্রাণ হারায়. কিছু কিছু হিসাবে এই মৃত্যুর সংখ্যা দশ কোটিও বলা হয়. 

কারণ তখনও প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলছিল. এবং সৈনিকরা এক দেশ থেকে অন্য দেশে যাত্রা করছিল. এই কারণেই এই মহামারী খুব সহজেই সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ে. বলা হয় এই রোগে বয়স মানুষদের থেকে যুবক ও স্বাস্থ্যবান ব্যক্তিরা বেশি আক্রান্ত হয়েছিল. উনিশশো সাতচল্লিশের দেশ ভাগ একটি মানুষের জীবনে সবথেকে খারাপ সময় তখনই আসে. যখন তাকে নিজের ঘর নিজের জন্মভূমি এবং এলাকা ছেড়ে চলে যেতে হয়.

 পৃথিবীতে এর আগে এত বড় migration কখনো দেখেনি. যেখানে প্রায় এক কোটি চল্লিশ লক্ষ মানুষ তাদের নিজের ঘর ছেড়ে অন্য দেশে চলে যায়. কত বাচ্চা অনাথ হয়েছে কত নারী তাদের সম্মান হারিয়েছে. তার হিসাব নেই. আনুমানিক হিসাবে বলা হয় প্রায় পাঁচ থেকে কুড়ি লক্ষ মানুষ দেশভাগের প্রাণ হারিয়েছিল. হতে পারে এই সংখ্যাটা আরও বেশি. দেশভাগের সময় পাকিস্তান থেকে ভারতে একটি যাত্রী বোঝাই ট্রেন এসেছিল. যাতে সমস্ত যাত্রী মৃত ছিল.



মঙ্গলদের বিজয় অভিযান. তেরোশো শতকের শুরুর দিকে মঙ্গোল সাম্রাজ্যের সূচনা হয়. তারা পৃথিবীর এক বিরাট অংশ জিতে নিয়েছিল. তবে তারা এই জয় পেয়েছিল বহু মানুষের জীবনের বদলে. মঙ্গোল সাম্রাজ্যের সূচনা করেছিলেন চেংগ খান. যিনি প্রায় চার কোটি মানুষের হত্যা করেছিলেন. বহু শহর এবং গ্রাম তিনি রাতারাতি আগুনে পুড়িয়ে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছিলেন. ইতিহাস বিদদের মতে চেঙ্গিস খানের শাসনকাল. ইতিহাসের সবচেয়ে অন্ধকার সময়ের মধ্যে একটি. 

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ. সেই সময় কেই বা ভেবেছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার মাত্র কুড়ি বছরের মধ্যেই আরো একটি বিধ্বংস যুদ্ধ হবে. প্রথম বিশ্বযুদ্ধে হওয়া সন্ধে তিক্ততা বাড়িয়েছিল পরাজিত পক্ষের মধ্যে ফলে এত তাড়াতাড়ি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দামামা বেজে উঠেছিল. ছ বছর ধরে চলা এই যুদ্ধ আজ পর্যন্ত. ইতিহাসে সব থেকে বিধ্বংসী যুদ্ধ হিসাবে জায়গা করে নিয়েছেন এই বিশ্বযুদ্ধে ছয় কোটি মানুষ প্রাণ হারান. এই যুদ্ধে সর্বপ্রথম পারমাণবিক বোমার ব্যবহার করা হয়েছিল. এবং এই যুদ্ধ চলাকালীনই হিটলার ইহুদীদের ওপর অত্যাচার করার জন্য কন্সেন্ট্রেশন ক্যাম্প তৈরি করেছিল.



বিউবনিক প্লেক তবে এই মহামারী ইতিহাসে black day নামে বেশি পরিচিত. এটি মানব ইতিহাসে সব থেকে বিনাশকারী মহামারী ছিল. একটি আনুমানিক হিসাবে বলা হয়. আট থেকে কুড়ি কোটি মানুষ এই মহামারীতে মারা গিয়েছিল. এই মৃত্যুর সংখ্যা এতটাই বেশি দেশের সময় ইউরোপের প্রায় ষাট শতাংশ জনসংখ্যা নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় এই মহামারীতে. এই রোগ নিয়ে ইউরোপে অনেক ধরনের কুসংস্কার প্রচলিত হয়েছিল. রোগের কারণ জানতে মানুষ ভাবে এই রোগের কোনো ঔষধ নেই, এই রোগ ঈশ্বরের রোষে হচ্ছে এই অন্ধবিশ্বাসের ফলে মহামারী আরো বড় আকার ধারণ করে. পাঁচশো ছত্রিশ খ্রিস্টাব্দে. 

ইতিহাস মতে পাঁচশো ছত্রিশ খ্রিস্টাব্দে ইতিহাসে সব থেকে খারাপ সময় ছিল মানব জাতির জন্য এই বছর পৃথিবীর অনেক দেশ অন্ধকারে ডুবে গিয়েছিল. এই সময় এক রহস্যময় ধোঁয়া ইউরোপ ও মধ্য এশিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছিল. ফলে প্রায় আঠেরো মাস অন্ধকারে ডুবে গিয়েছিল এই দেশগুলো সূর্যের আলো মাটি পর্যন্ত পৌঁছাচ্ছিল না. তাপমাত্রা মাইনাস আড়াই ডিগ্রী পর্যন্ত নেমে মাঠের ফসল নষ্ট হয়ে যায়. 

অসংখ্য মানুষ এই সময় অনাহারে প্রাণ হারান. ইতিহাসবিদরা এই সময়টিকে dark age নাম দিয়েছেন. ইতিহাসের পাতায় চোখ রাখলেই এমন অজস্র খারাপ সময় আমাদের সামনে ভেসে উঠবে, আজও বহু দেশে গৃহযুদ্ধ. অনাহারে প্রাণ হারাচ্ছে মানুষ. কিন্তু আমাদের এইসব ঘটনা থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত. যাতে ভবিষ্যতে এমন ঘটনার মুখোমুখি না হই. বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই.  ভালো লাগলে অবশ্যই বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করুন.












একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

3 মন্তব্যসমূহ